সেই অন্তঃসন্ত্বা হাতিকে বারুদ ভরা আনারস খাওয়ানোর খবর ভুয়া

আলোচিত অন্তঃসন্ত্বা হাতিকে বারুদ ভরা আনারস খাইয়ে মারার খবরটি সঠিক নয়। ভারতের কেরালার সংশ্লিষ্ট বন কর্মকর্তা এবং ময়নাতদন্তকারী কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস টাইমস (আইবি টাইমস)।

বুধবার দেশটির প্রায় সব সংবাদমাধ্যমে বলা হয়, অন্তঃসত্ত্বা হাতিটি দলছুট হয়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ার পর তাকে শায়েস্তা করতে একটি আনারসে বারুদ ভরে টোপ দেয়া হয়। ওই আনারস খেতেই বিকট শব্দে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে ঝলসে যায় হাতিটির মুখ। সেখানে মারা যায় হাতিটি। এমনকি ঘটনাটি এভাবেই সামাজিক মাধ্যমে তুলে ধরে বন অধিদফতরের এক কর্মকর্তা।

তবে আইবি টাইমসের ‘ফ্যাক্ট চেক’ টিম সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানাচ্ছে, যেভাবে ‘টোপ ফেলে’ বা ‘বারুদ ভরা আনারস খাইয়ে’ মারার কথা বলা হচ্ছে তা সঠিক নয়। বন্য শূয়োরসহ জীবজন্তুর অনিষ্ঠ থেকে রক্ষা পেতে এলাকাবাসীর পাতা সুরক্ষা ফাঁদে দুর্ঘটনাবশত পড়ে মৃত্যু হয়েছে হাতিটির।

ওই এলাকার বন কর্মকর্তা ড. এবি কাইয়ুম এ বিষয়ে আইবি টাইমসকে বলেন, কেউ হাতিটিকে আনারস খাওয়ায়নি। বরং কোথাও পড়ে থাকা আনারস সে নিজের বিপদ আঁচ না করতে পেরে খেয়ে ফেলেছে।

হাতিটির মরদেহের ময়নাতদন্তকারী বুনো পশু বিশেষজ্ঞ ড. ডেভিড আব্রাহাম বলেন, হাতিটির মৃত্যু হয়েছে ফুসফুস ও শ্বাসনালীতে পানি জমে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে (নদীতে নামার পর হাতিটি পানিতে মুখ ডুবিয়েছিল)। প্রথমে আমরা কেউই জানতাম না যে হাতিটি অন্তঃসত্ত্বা ছিল। পরে তার হৃদযন্ত্রে অ্যামনিওটিক ফ্লুইড (গর্ভাবস্থায় তৈরি হওয়া তরল পদার্থ) দেখি এবং বুঝতে পারি প্রাণীটি অন্তঃসত্ত্বা ছিল।

এর আগে খবরে হাতিটিকে বুনো বলা হলেও আইবি টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, এটি কেরালার পালাক্কাড শহরের সাইলেন্ট ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কের হাতি। আনারসটি খেয়ে ফেলার পর যন্ত্রণা শুরু হলে তা উপশমে হাতিটি পাশের ভেলিয়ার নদীতে ছুটে যায়। সেখানে অনেক সময় দাঁড়িয়ে থাকার পর এটি নিথর হয়ে যায়। নিদারুণ যন্ত্রণা হলেও মৃত্যুর সময় বেশ চুপসে ছিল ১৫ বছরের হাতিটি।


সর্বশেষ সংবাদ