ইসরায়েলে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বিচার শুরু

দুর্নীতির অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বিনইয়ামিন নেতানিয়াহুর বিচার শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নতুন মেয়াদের জন্য শপথ গ্রহণের মাত্র কয়েকদিন পরই এ বিচার শুরু হলো। তার বিরুদ্ধে ঘুষ, জালিয়াতি এবং বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে। ইসরায়েলের ইতিহাসে মি. নেতানিয়াহুই হচ্ছেন প্রথম ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী যার ফৌজদারি মামলায় বিচার হচ্ছে।

তার বিরুদ্ধে আনা তিনটি মামলার প্রথমটিতে বলা হয়, তিনি ক্ষমতাধর ব্যবসায়ীদের সুবিধা দেবার বিনিময়ে চুরুট এবং শ্যাম্পেনের বোতলসহ নানা উপহার গ্রহণ করেছেন। দ্বিতীয়টিতে বলা হয়: মি. নেতানিয়াহু ইসরায়েলি সংবাদপত্র ইয়েদিওত আহরোনট-কে প্রস্তাব দিয়েছিলেন যে তার ব্যাপারে ইতিবাচক খবর ছাপালে তিনি পত্রিকাটির বিক্রি বাড়াতে সহায়তা করবেন।

তৃতীয় অভিযোগে বলা হয়, মি. নেতানিয়াহু প্রধানমন্ত্রী এবং যোগাযোগমন্ত্রী থাকার সময় টেলিকম প্রতিষ্ঠান শাওল এলোভিচের সংবাদ ওয়েবসাইটে ইতিবাচক রিপোর্টের বিনিময়ে তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের সুবিধা হয় এমন নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য কাজ করেছেন।

জেরুসালেমে আদালতে হাজির হয়ে ৭০ বছর বয়স্ক মি. নেতানিয়াহু তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, যে কোন উপায়ে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করাই এসব মামলার লক্ষ্য। এসব অভিযোগ ওঠার পর তার পদত্যাগের দাবি জানানো হলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।

দক্ষিণপন্থী লিকুদ পার্টির নেতা মি. নেতানিয়াহু হচ্ছেন ইসরায়েলের ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার প্রধানমন্ত্রী। তিনি ২০০৯ সাল থেকে টানা ক্ষমতায় আছেন এবং এর আগে ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৯ পর্যন্ত আরেক দফা প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।

তার আইনজীবীরা আবেদন করেছিলেন যেন প্রথম দিনের শুনানীতে মি. নেতানিয়াহুকে হাজিরা দিতে না হয়, কিন্তু আদালত সে আবেদন প্রত্যাখ্যান করে। জেরুসালেমে আদালতের কাছে তার সমর্থক এবং বিপক্ষের বিক্ষোভকারীরা সমবেত হয়।

ইসরায়েলের ইতিহাসে একজন প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতাসীন অবস্থায় বিচার হচ্ছে এমন ঘটনা কখনো ঘটেনি। এর আগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্টের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে তিনি ক্ষমতাসীন দলের নেতার পদ ছেড়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু পরবর্তী নির্বাচন পর্যন্ত আইনগতভাবে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ইসরায়েলে আইনে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোন অপরাধের অভিযোগ দায়ের হলেও তার পদত্যাগ করতে হয় না।

ফলে দোষী প্রমাণিত হলেও মি নেতানিয়াহু সবরকম আপিলের প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন। তাই বলা হচ্ছে, এ মামলা কয়েক মাস এমনকি কয়েক বছর ধরেও চলতে পারে।


সর্বশেষ সংবাদ