দোকানিকে লাঠিচার্জ করে ওসি বললেন— কাফনের কাপড় আছে? (ভিডিও)

করোনায় সারদেশে চলা অঘোষিত লকডাউনের মধ্যে নোয়াখালীর চাটখিলে এক দোকানিকে পুলিশের লাঠিচার্জের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে এসময় দোকান খুলে ‘কাফনের কাপড়’ বিক্রি করছে কিনা জিজ্ঞেস করে পুলিশ। এ নিয়ে জেলাজুড়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে।

চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বিষয়টি নিয়ে জানান, বারবার বলার পরও দোকানগুলো লকডাউন অমান্য করে খোলা হচ্ছে। বাজারগুলোতে ভিড় কমানো যাচ্ছে না। তাই আমরা আইন মানতে ভয় দেখানোর জন্য লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হয়েছি। দোকানিকে গালি দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি দোকানদারকে গালি দেয়নি। দোকানে প্রবেশ করার সময় অন্য কাউকে দিয়েছি।

সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে সোমবার দুপুরে চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নেতৃত্বে উপজেলার সোমপাড়া বাজারে অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযানে মদিনা ক্লথ ষ্টোর নামের একটা দোকানে গিয়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করার একটি ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে পোস্ট করা হলে সাথে সাথে ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় তুলে। অনেকেই পুলিশের পক্ষে এবং বিপক্ষেও অবস্থান নিতে দেখা যায়।

ওই ভিডিওতে দেখা যায়, সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে দোকানদার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। তখন পুলিশ দোকানদারকে লাঠিচার্জ করে আর জিজ্ঞেস করে কাপনের কাপড় বিক্রি করে কিনা? একই সাথে উপস্থিত মহিলা ক্রেতাদের জিজ্ঞেস করে কি সমস্যা? স্বামী কি করে?

এই বিষয়ে মদিনা ক্লথ স্টোরের মালিক মো. বাহার দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, আমি আমার নিজের ভুল স্বীকার করছি। রাষ্ট্রীয় বিধান অমান্য করে দোকান খুলতে যাওয়া এটা আমার অন্যায় হয়েছে। তবে আমাকে জরিমানা করা হয়নি লাঠিচার্জ করা হয়েছে একই সাথে দোকান তালাবদ্ধ করে চাবি নিয়ে গেছে।

এই বিষয় নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মো আলমগীর হোসেন বলেন, জেলায় প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা রোগী। তাই জনগনের মধ্যে সচেতনতা জরুরি। যারা সরকারি নিষেধ অমান্য করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। জেলার বিভিন্নস্থানে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। জনস্বার্থে পুলিশের এ অভিযান অব্যহত থাকবে।

করোনা সংক্রমণ রোধকল্পে গত ১১ এপ্রিল নোয়াখালীকে লকডাউন ঘোষনা করে প্রশাসন। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গত কয়েকদিন আগে সীমিত পরিসরে দোকান-পাট খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে দেখা যায় মার্কেট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। কিন্তু অধিকাংশ ক্রেতা-বিক্রেতা সরকার প্রদত্ত শর্ত মানছে না। এছাড়া করোনা সংক্রমণে মৃত্যু ও আক্রান্ত দু্টি বাড়ছে।

এমতাবস্থায় জনস্বার্থে ও নোয়াখালী-৪ আসনের সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরীর অনুরোধে জেলায় ১৫ মে ভোর ৬ টা থেকে ফের লকডাউন কঠোর করে প্রশাসন। প্রথমদিনে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় পুলিশসহ আইন শৃংঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক তৎপরতা দেখা গেছে। আটক, জরিমানা ও মুচলেকা নেওয়া হয়েছে অনেক ক্রেতা ও বিক্রেতার কাছ থেকে।


সর্বশেষ সংবাদ