মাস্ক না পরায় ছাত্রলীগ নেতাকে পিটুনি, হাসপাতালে ভর্তি

করোনা ভাইরাসে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মাস্ক না পরায় নড়াইলে তরিকুল ইসলাম নামের এক তরুণকে পুলিশ বেদম পিটিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আহত অবস্থায় তাঁকে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত তরিকুল নড়াইল সদর উপজেলার শেখহাটি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। ঘটনার বিচার চেয়ে তাঁর মা লতিফা বেগম শনিবার পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তরিকুল ইসলাম বলেন, তিনি গত বৃহস্পতিবার সকালে শেখহাটি বাজারে তরিতরকারি কিনতে গিয়েছিলেন। এ সময় সাদাপোশাকের দুই ব্যক্তি ঘটনাস্থলে আসেন। ‘তুই মাস্ক না পরে করোনা ছড়াতে বাজারে এসেছিস?’—এ কথা বলেই তাঁকে ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে দেন। পরে মোটা বেতের লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকেন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। তা উপেক্ষা করে তাঁকে টানতে টানতে ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে থেমে থেমে কয়েকজন মিলে তাঁকে পেটান। পরে হাতকড়া পরিয়ে থানায় নিয়ে যান।


তরিকুলের ভাষ্য, নড়াইল সদর থানার ওসি ঘটনাস্থলে যান। তিনি বিষয়টি মীমাংসা করার কথা বলেন। পরে তরিকুল চিকিৎসা নিতে সদর হাসপাতালে যান। কিন্তু তাঁকে সেখানে চিকিৎসা নেওয়ারও সুযোগ দেওয়া হয়নি। হাসপাতাল থেকে এক পুলিশ সদস্য তাঁকে জোরপূর্বক ধরে শেখহাটিতে নিয়ে যান। সেখানে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। এ অবস্থায় রাত ৯টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়।

তরিকুলের মা লতিফা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে। করোনার কারণে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বাড়িতে এসেছে। এ অবস্থায় তাকে বেধড়ক পিটিয়েছে পুলিশ। আমি ঘটনার বিচার চাই। এ জন্য পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন করেছি।’

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সময় শেখহাটি বাজার কমিটির কয়েকজন সদস্য সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন। তাঁরা তরিকুলকে মারধর না করা ও ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। তা উপেক্ষা করেই তাঁকে পেটান স্থানীয় ফাঁড়ির পুলিশ সদস্য মো. আলমগীর, মাসুদ, নাঈম, বিপ্লবসহ সাত–আটজন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শেখহাটি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. এনামুল হোসেন বলেন, ‘সরকারি নির্দেশ মোতাবেক আমরা দায়িত্ব পালন করছিলাম। তরিকুলের মাস্ক পরা ছিল না। কেন পরেননি জানতে চাইলে তিনি আমাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এ নিয়ে তাঁর সঙ্গে শুধু ধাক্কাধাক্কি হয়।’ তরিকুলকে পেটানো হয়নি বলে তিনি দাবি করেন।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহরিয়ার বলেন, তরিকুল ইসলাম শেখহাটি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। তাঁকে এভাবে পেটানো ঠিক হয়নি। বিষয়টি পুলিশ সুপারকে অবগত করা হয়েছে। এখন তাঁরা ন্যায়বিচার আশা করছেন।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দীন বলেন, ‘বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


সর্বশেষ সংবাদ