পাপিয়ার মোবাইলে অশ্লীল ভিডিও

  © সংগৃহীত

র‌্যাবের হাতে আটক যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদকের মোবাইল থেকে অসংখ্য অশ্লীল ভিডিও পাওয়া গেছে। উদ্ধার হওয়া ভিডিওগুলোর মধ্যে কয়েকটি ইতোমধ্যেই ফেসবুক সহ বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাব-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাফী উল্লাহ বুলবুল।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।

শাফী উল্লাহ বুলবুল বলেন, শামিমা নূর পাপিয়ার নিজ মোবাইলে বেশ কিছু অশ্লীল ভিডিও পাওয়া গেছে। ওই ভিডিও থেকে কয়েকটি এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। তবে এই ধরণের ভিডিও যে কোনো নারীর জন্য আপত্তিকর ও অনৈতিক।

র‌্যাব জানায়, যুবলীগ নেত্রী পাপিয়া প্রকাশ্য আয়ের উৎস গাড়ি বিক্রি ও সার্ভিসিংয়ের ব্যবসা। তবে এর আড়ালে তিনি মূলত অবৈধ অস্ত্র ও মাদকের ব্যবসা করতেন। কোনো কাজ বাগিয়ে নিতে পাঁচতারকা হোটেলে সুন্দরী তরুণীদের পাঠিয়ে মনোরঞ্জন করতেন সংশ্নিষ্ট ব্যক্তিদের। তার বৈধ আয় অনুযায়ী পাপিয়ার বার্ষিক আয় মাত্র ১৯ লাখ টাকা। অথচ রাজধানীর অভিজাত একটি হোটেলে শুধুমাত্র গত তিন মাসে তিনি বিল পরিশোধ করেছেন প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এসব ব্যাপারে অনুসন্ধান করছিল র‌্যাবের একটি দল। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে শনিবার সকালে তড়িঘড়ি করে দেশত্যাগের চেষ্টা চালান পাপিয়া। তবে শেষ রক্ষা হয়নি।

অবশেষে শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) গোপনে দেশত্যাগের সময় নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সেক্রেটারি শামিমা নূর পাপিয়াকে তিন সহযোগীসহ গ্রেফতার করে র‌্যাব। তাদের কাছে পাওয়া গেছে সাতটি পাসপোর্ট, বাংলাদেশি দুই লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ জাল টাকা, ৩১০ ভারতীয় রুপি, ৪২০ শ্রীলঙ্কান মুদ্রা, ১১ হাজার ৯১ মার্কিন ডলার ও সাতটি মোবাইল ফোন।

র‌্যাব-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাফী উল্লাহ বুলবুল বলেন, পাপিয়ার আয়কর ফাইল তলব করে দেখা গেছে, সেখানে তিনি বছরে ২২ লাখ টাকা আয় দেখিয়েছেন। অথচ তাঁর প্রতিদিন বারের বিলই আসে আড়াই লাখ টাকা। এত টাকার উৎস কোথায়? জানতে চাইলে পাপিয়া র‌্যাবকে জানিয়েছেন, যাঁরা হোটেলে আসতেন, তাঁদের কাছে ‘মেয়ে’ পাঠিয়ে দেওয়া হতো। এরপর অশ্লীল ভিডিও তুলে ওই সব ব্যক্তির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করা হতো। লোকলজ্জার ভয়ে কেউ মুখ খুলত না। এ রকম সাতজন উঠতি বয়সী তরুণীর সঙ্গে র‌্যাবের কথা বলা সম্ভব হয়েছে, যাঁদের মাসে ৩০ হাজার টাকা করে দিতেন পাপিয়া। বিনিময়ে তাঁদের ব্যবহার করা হতো। কেউ রাজি না হলে তাঁদের লাঠি দিয়ে পেটাতেন পাপিয়া। আবার কোনো কোনো মেয়ের আপত্তিকর ছবি ‘বড়লোক’ কাস্টমারদের মুঠোফোনে পাঠিয়ে দিয়ে আগ্রহ তৈরি করতেন। এরপর ওই লোকগুলো এলে তাঁদের জিম্মি করা হতো।


সর্বশেষ সংবাদ