মদ খেতে বারে ছাত্রলীগ ও মৈত্রী নেতা, অতঃপর লঙ্কাকাণ্ড!

  © ফাইল ফটো

রাজশাহী মহনগরীর পর্যটন মোটেল বারে মদ পান করতে গিয়ে লঙ্কাকাণ্ড ঘটিয়েছেন ছাত্রলীগ ও ছাত্রমৈত্রীর দুই নেতা। মদ্যপ হয়ে বারের অন্য খদ্দেরদের সাথে হাতাহাতি, কর্মচারিদের মারপিট এবং সবশেষ বারে এলোপাতাড়ি ভাঙচুর চালিয়ছেন তারা। ভাঙচুর ও মাতলামির মামলায় গ্রেফতার করে পুলিশ দুই ছাত্রনেতা ও তাদের দুই সহযোগীকে পাঠিয়েছেন জেলহাজতে।

গ্রেফতার দুই নেতা হলেন- রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. রমজান আলী জনি (৩০) ও মহানগর ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি এএইচএম জুয়েল খান (২৮)। ছাত্রলীগ নেতা জনি নগরীর লক্ষ্মীপুরের ভাটাপাড়া এলাকার একতার হোসেনের ছেলে এবং মৈত্রী নেতা জুয়েল নগরীর উপরভদ্রা এলাকার মোসলেম উদ্দিনের ছেলে।

তাদের সাথে গ্রেফতার হওয়া অন্য দুই জন হলেন- নগরীর লক্ষ্মীপুরের ভাটাপাড়া এলাকার আব্দুল হামিদের ছেলের জসিম (২৩) ও একই এলাকার মাহবুবুর রহমানের ছেলে তারেক (২২)। তাদের রাজনৈতিক পরিচয় এখনও জানা যায় নি। মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে তাদেরকে আদালতে হাজির করা হয়।

নগরীর রাজপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহাদত হোসেন খান বলেন, ‘পর্যটন মোটেল বারের ব্যবস্থাপক আব্দুর রাজ্জাক ৬ জনকে আসামি করে দু’টি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় চার আসামিকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। অন্য আসামিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা করছে পুলিশ।’

নগরীর রাজপাড়া থানায় দায়েরকৃত মামলার এজহার বাদী উল্লেখ করেছেন, সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাত ১২টার দিকে এক লাইসেন্সে মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রমজান আলী জনি ও মহানগর শাখা ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি জুয়েল খান নগরীর শ্রীরামপুরে পর্যটন মোটেলে মদ পান করতে যান। মৈত্রী নেতা জুয়েলের মদ পানের লাইসেন্স থাকলেও ছাত্রলীগ নেতা জনির লাইসেন্স নেই। ফলে একজনের লাইসেন্সে দু’জন মদ পান শুরু করেন।

কিছুক্ষণ পর তারা মাতাল হয়ে বারের সিনিয়র কাস্টমারদের সাথে বাকবিতন্ডা এবং হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। তাদেরকে নিবৃত করার চেষ্টা করেন কর্মচারিরা। তাদের সাথে ঝামেলায় জড়ানো দু’জন কাস্টমার তখন বেরিয়ে যান। পরে মোটরসাইকেল নিয়ে তাদের ধাওয়া করেন ছাত্রলীগ নেতা জনি ও ছাত্রমৈত্রী নেতা জুয়েল।

তবে তাদের নাগাল না পেয়ে বারে এসে কর্মচারিদের এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন। কর্মচারিরা সেখান থেকে সরে গেলে ওই দুই ছাত্রনেতা ও তার সহযোগীরা বারে এলোপাতাড়ি ভাঙচুর চালান। বারের ব্যবস্থাপক পুলিশকে ফোন করেন। তবুও পুলিশ না আসায় পাশে থাকা রাজপাড়া থানায় গিয়ে পুলিশ ডেকে এনে তাদেরকে ধরিয়ে দেন এবং রাতেই দু’টি মামলা দায়ের করেন।

ছাত্রলীগ নেতার এমন কাণ্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান রাজিব বলেন, ‘রমজান আলী জনি এর আগেও এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। তাকে বেশ কয়েকবার দলের পক্ষ থেকে সতর্কও করা হয়েছে। তবুও সে নিবৃত হয়নি। বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতাদের অবগত করা হবে।’

রাজশাহী মহানগর ছাত্রমৈত্রীর সাবেক সভাপতি ও রাসিকের ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। এটি ছাত্রনেতাদের কাছ থেকে মানুষ প্রত্যাশা করে না। অত্যন্ত দুঃখজনক ও লজ্জাজনক ঘটনা।’ (সূত্র: বার্তা২৪.কম)


সর্বশেষ সংবাদ