বন্ধুরাই স্কুলছাত্র রকিকে হত্যা করে, লাশ বেঁধে রাখে কড়ই গাছে

  © সংগৃহীত

শ্রীমঙ্গলের বধ্যভূমির পাশে চা বাগান থেকে উদ্ধার স্কুলছাত্র ইব্রাহিম মিয়া রকি হত্যার রহস্য উদঘাটন করার দাবি করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার দুই কিশোর সাব্বির ও ফায়সাল হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

সাব্বির মিয়া (১৭) শহরতলীর পশ্চিম খাসগাঁও গ্রামের আবুল মিয়ার ছেলে। আর ফায়সাল মিয়াও (১৭) একই গ্রামের বাসিন্দা মোখলেছ মিয়ার সন্তান। লাশের সঙ্গে থাকা চাদর এবং তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামিদের শনাক্ত করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।

জানা গেছে, কিশোর ইব্রাহিম মিয়া রকি শহরের ভিক্টোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র ছিলো। পিতা মাংস ব্যবসায়ী দুলাল মিয়া। শহরের ১০ নম্বর জালালিয়া সড়কে তারা বসবাস করতো।

শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামান শ্রীমঙ্গল থানায় হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, মঙ্গবার স্টেশন রোড এলাকা থেকে সাব্বির এবং খাসগাঁও থেকে ফয়সালকে আটক করা হয়। রাতে থানায় জিজ্ঞাসাবাদে রকি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে তারা।

দু‘জনের ভাষ্যমতে, রকির সাথে সাব্বিরের বন্ধুত্ব ছিল। এক আগে তাদের মধ্যে সিনিয়র-জুনিয়র নিয়ে ঝগড়া হয়। তখন সাব্বিরের গালে চরথাপ্পড় মারে রকি। পরে সাব্বির প্রতিশোধ নেয়ার সুযোগ খুঁজতে থাকে। একমাস তাদের মধ্যে কোন যোগাযোগও ছিল না।

গত সোমবার সন্ধ্যায় রকিকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে সাব্বির। সে অনুযায়ী আরেক বন্ধু ফয়সালের সঙ্গে শ্রীমঙ্গল স্টেশন রোডে একত্রিত হয়। রাত সাড়ে ৮টার দিকে সাব্বির রকিকে ফোন দিয়ে জানায়, একটি অনুষ্ঠানে যেতে রেলগেটে আছে সে। রকি তাদের কথা মতো শহরের ভানুগাছ রোডের রেল গেট এলাকায় একত্র হয়।

সেখান থেকে অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা বলে দক্ষিণ ভাড়াউড়া ভুরবুড়িয়া চা-বাগানে নিয়ে রকির মুখে হাত দিয়ে চেপে ধরে ফেলে দেয় সাব্বির। এসময় ফয়সাল তার হাতে ধরলে সাব্বির মুখে স্কচটেপ দিয়ে মুখে ও গলায় পেঁচিয়ে অন্তত ১০ মিনিট রকির গলা চেপে ধরে বুকের উপরে বসে থাকে।  ফয়সালও রকির পা চেপে ধরে রাখে।

রকি নিস্তেজ হওয়ার পর দুজন মিলে জ্যাকেটের সাহায্যে টেনে ৭/৮ হাত দূরে কড়ই গাছের সঙ্গে সাব্বিরের কালো রঙের চাদর দুভাগ করে এবং রকির প্যান্টের বেল্ট গলায় পেঁচিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে। পরে দুজন বাড়ি চলে যায়। এ ঘটনায় বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করে শ্রীমঙ্গল থানার মামলা করেন রকির মা।

শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুছ ছালেক বলেন, ‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যা ক্লু উদঘাটন করেছি। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে তারা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদালতে দিয়েছে। পরে আদালত তাদের জেল হাজতে প্রেরণ করেন।’


সর্বশেষ সংবাদ