চতুর্থ শ্রেণির দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানি শিক্ষকের

  © টিডিসি ফটো

অজ্ঞাত ব্যক্তি বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির দুই ছাত্রীর যৌন হয়রানির ভিডিও গোপনে ধারণ করেন এবং প্রধান শিক্ষকের কক্ষে সেই ভিডিও সিডি রেখে যান। গত ৪ ডিসেম্বর যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটলেও ১৪ ডিসেম্বর তা জানাজানি হয়।

গত বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি ওই বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছেন। অপরদিকে যৌন হয়রানির শিক্ষার এক ছাত্রী মা অভিযুক্ত শিক্ষককে আসামি করে শাজাহানপুর থানায় একটি মামলা করেছেন। এ ঘটনার পর থেকে গত ১৬ ডিসেম্বর থেকে শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন।

জানা যায়, এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর দুপুরে ক্লাস বিরতির সময় শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম দুই ছাত্রীকে প্রাইভেট পড়ানোর কথা বলে তৃতীয় তলার একটি রুমে নিয়ে যান। তিনি সেখানে ওই দুই শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি করেন। কিন্তু কোনো একজন ব্যক্তি গোপনে ঘটনাটির ভিডিওধারণ করেন। অপরদিকে যৌন হয়রানি ঘটনায় দুই ছাত্রী মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে।

এ ব্যাপারে শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমের কাছে জানতে চান। তখন জাহাঙ্গীর ক্ষিপ্ত হন এবং ছাত্রীকে স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন। পরে গত ১৪ ডিসেম্বর কে বা কারা ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে একটি খামে চিরকুট ও ছাত্রীদের যৌন হয়রানির ভিডিও সিডি রেখে যায়। চিরকুটে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও অনুরোধ করা হয়। পরদিন ১৫ ডিসেম্বর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিষয়টির তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে চিঠি দেন। চিঠির সঙ্গে যৌন হয়রানির শিকার দুই ছাত্রীর অভিভাবকের অভিযোগপত্র ও অজ্ঞাত ব্যক্তির রেখে যাওয়া সিডি সংযুক্ত করা হয়। পরে গত ১৮ ডিসেম্বর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফারুক উদ্দিন উপজেলা সহকারি শিক্ষা অফিসার তাহেরুল ইসলামকে প্রধান করে সহকারি শিক্ষা অফিসার জহুরুল ইসলাম ও মোহাম্মদ পারভেজকে সদস্য করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। ওই তদন্ত কমিটি ১৯ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) বিদ্যালয়ে গিয়ে তদন্ত কাজ সম্পন্ন করে।

মামলা ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ ৮ জন শিক্ষিকা এবং জাহাঙ্গীর আলম একমাত্র শিক্ষক। তার আচরণে শিক্ষিকারাও অতিষ্ঠ।

সহকারি শিক্ষা অফিসার তাহেরুল ইসলাম বলেন, “স্কুলের প্রধান শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, সদস্য, অভিভাবক ও ভুক্তভোগী ছাত্রীদের সাথে কথা বলেছি। এছাড়া ভিডিও ফুটেজ দেখা হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক জাহাঙ্গীরের মোবাইল ফোন বন্ধ রাখায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তার পরিবারের দাবি, “জাহাঙ্গীর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন।”


সর্বশেষ সংবাদ