ডিগ্রি পরীক্ষায় ছাত্রলীগ সভাপতির প্রক্সি দিতে গিয়ে গ্রেফতার যুবক

  © ফাইল ফটো

শরীয়তপুর সরকারি কলেজ থেকে ডিগ্রি প্রথম বর্ষ পরীক্ষায় ছাত্রলীগের সভাপতি সোহাগ বেপারীর পরিবর্তে প্রক্সি দিতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছেন হাসেম হাওলাদার (২৪) নামে এক যুবক। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। গ্রেফতারকৃত হাসেম হাওলাদার শরীয়তপুর সদর উপজেলার চরপাতানিধি গ্রামের আ. জলিল হাওলাদারের ছেলে।

জানা যায়, সোহাগ বেপারী অসুস্থ দেখিয়ে শরীয়তপুর সরকারি গোলাম হায়দার খান মহিলা কলেজ কেন্দ্রের ২০১নং কক্ষে বুধবার দর্শন পরীক্ষায় বেড সিটে একা পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ নেয় বলে কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায়। সেখানে তিনি পরীক্ষা না দিয়ে তার পরিবর্তে অন্য হাসেম হাওলাদার নামে একজনকে দিয়ে পরীক্ষা দেয়াচ্ছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার ছিল ডিগ্রি প্রথম বর্ষ দর্শন পরীক্ষা। আর এ পরীক্ষায় শরীয়তপুর সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহাগ বেপারী শরীয়তপুর সরকারি কলেজের ছাত্র হিসেবে একাদশ শ্রেণির ১ম বর্ষ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। তখন দর্শন পরীক্ষা চলাকালে শরীয়তপুর সরকারি গোলাম হায়দার খান মহিলা কলেজে পরিদর্শনে যান শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মাহবুব রহমান। তিনি গিয়ে পরীক্ষার্থী সোহাগ বেপারীকে না পেয়ে তার পরিবর্তে বহিরাগত যুবক হাসেম হাওলাদারকে পরীক্ষা দিতে দেখেন। এ সময় নির্বাহী কর্মকর্তা তাকে নাম-ঠিকানা জানতে চাইলে সে সোহাগ বেপারী বলে পরিচয় দেয়। এ সময় কাগজ-পত্র ও প্রবেশপত্রের ছবির সঙ্গে মিল না থাকায় হাসেম হাওলাদারকে গ্রেফতার করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।

শরীয়তপুর সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সোহাগ বেপারী বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। আমি পরীক্ষা দেয়নি। এ বলে মোবাইল ফোন কেটে বন্ধ করে দেন। এর একাধিকবার ফোন দিলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মোহসীন মাদবর বলেন, ছাত্রলীগ কোনো অন্যায়কারীকে প্রশ্রয় দেয় না। যে অন্যায় করেছে তার শাস্তি পাওয়া দরকার।

এ বিষয়ে কলেজের সাবেক ভিপি জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শেখ আ. সালাম বলেন, অছাত্র দিয়ে ছাত্রলীগের কমিটি করার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।

কলেজের অধ্যক্ষ মো. রেজাউল করিম বলেন, শরীয়তপুর সরকারি কলেজের ছাত্র সোহাগ বেপারীর পরিবর্তে হাসেম হাওলাদার নামে এক যুবক প্রক্সি পরীক্ষা দেয়। প্রথমে আমাদের কলেজের অফিস সহায়ক বিষয়টি জানার পর আমাকে জানায়। আমি প্রশাসনকে অবহিত করি। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাতেনাতে ধরে তাকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।

শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মাহবুব রহমান বলেন, একাডেমি ভবনের বাইরে বসে নিয়ম বহির্ভূতভাবে পরীক্ষা দেয়ার অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে হাসেম হাওলাদার নামে এক যুবককে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। তবে সে কার পরিবর্তে পরীক্ষা দিয়েছে, তা আমি জানি না।

 


সর্বশেষ সংবাদ