গায়ে আগুন দেয়া সেই কলেজছাত্রীর মৃত্যু

ফরিদপুরে বিয়ের দাবিতে কেরোসিন ঢেলে গায়ে আগুন দেয়া দেলোয়ারা বেগম দিলু (২৫) নামের সেই কলেজছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার চারদিন পর শনিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে তার মৃত্যু হয়।

মৃত কলেজছাত্রী জেলার সদর উপজেলার ডিক্রিরচর ইউনিয়নের সিএন্ডবি ঘাট এলাকার বেল্লাল শেখের মেয়ে। তিনি ফরিদপুরের উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনএস দ্বিতীয় বর্ষে পড়তেন।

দিলুর ভাই রাকিব হোসেন জানান, প্রায় ৪ বছর ধরে দিলুর সঙ্গে একই এলাকার শেখ কুদ্দুসের ছেলে আল-আমীনের (স্বাধীন) প্রেমের সম্পর্ক ছিল। স্বাধীন বিভিন্ন সময়ে দিলুর কাছ থেকে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় । সম্প্রতি স্বাধীনের বিয়ে ঠিক করে তার পরিবার। একথা জানতে পেরে গত মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর স্বাধীনদের বাড়িতে যান দিলু।

রাকিব আরও জানান, তার বোন কেরোসিন ভর্তি একটি বোতল নিয়ে সেখানে যান। তাকে বিয়ে না করলে গত পাঁচ বছর ধরে যত টাকা নিয়েছে সেই টাকা ফেরত দিতে হবে। টাকা না দিলে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেবে- বলে স্বাধীনের পরিবারকে সতর্ক করেন দিলু। কিন্তু তারা তাকে নিবৃত্ত না করে উল্টো ঘরের দরজা খুলে স্বাধীনের মা দিলুর গায়ে আগুন লাগিয়ে ঘরে ঢুকে আবার দরজা বন্ধ করে দেয়।

পরে দিলুর চিৎকার শুনে প্রতিবেশিরা এসে বালি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। ওইদিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এ ঘটনায় শনিবার বিকেলে নিহতের মা মমতাজ বেগম বাদি হয়ে ঢাকার শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলায় স্বাধীনসহ তার বাবা বেল্লাল শেখ ও মা মনোয়ারা বেগমকে আসামি করা হয়েছে বলে নিহতের পরিবার জানায়।

ফরিদপুর কোতয়ালী থানার এসআই বেলাল হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে থানায় কেউ লিখিত কোনো অভিযোগ করেনি। তবে লোকমুখে তিনি ঘটনাটি শুনেছেন। কেউ মামলা করলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব। এ ব্যাপারে স্বাধীন কিংবা স্বাধীনের পরিবারের বক্তব্য জানার জন্য তার বাড়িতে খোঁজ নিতে গেলেও কাউকে পাওয়া যায়নি। কোনো মোবাইল নম্বরেও তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।


সর্বশেষ সংবাদ