অ্যাম্বুলেন্সও রেহায় পায়নি পরিবহন শ্রমিকদের থেকে

  © টিডিসি ফটো

নতুন সড়ক আইন সংশোধনের দাবিতে পরিবহন শ্রমিকদের ডাকা অবরোধ চলাকালে সড়কে গাড়ির চালকদের মুখে পোড়া মবিল মেখে দিয়েছে শ্রমিকরা। এ সময় অ্যাম্বুলেন্সও রেহায় পায়নি তাদের হাত থেকে।

বুধবার (২০ নভেম্বর) সকালে কুমিল্লা শাসনগাছা ফ্লাইওভারের সামনে বিভিন্ন গাড়ির চালকদের মুখে জোরপূর্বক পোড়া মবিল মেখে দেয় অবরোধকারীরা। এতে সড়কের উভয় পাশে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সকেও ছাড়েনি শ্রমিকরা। অ্যাম্বুলেন্স চালকদের মুখে মবিল মেখে দেয়া হয়। এ অবস্থায় ভোগান্তির মধ্যে পড়েন হাজার-হাজার যাত্রী।

স্থানীয়রা জানায়, বুধবার সকাল থেকে কুমিল্লা নগরীর শাসনগাছা ফ্লাইওভারের মুখে অবরোধ করতে থাকে শ্রমিকরা। ফলে উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অবরোধের একপর্যায়ে চালকদের মুখে পোড়া মবিল মেখে দেয়া হয়।

অবরোধ চলাকালীন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে মালামাল আনা নেয়ার কাজে ব্যবহৃত কিছু ট্রাক দেখা গেলেও চোখে পড়েনি কোনো যাত্রীবাহী যানবাহন। পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড ও জাঙ্গালিয়া বাসস্ট্যান্ডে যানবাহনের জন্য অপক্ষোর প্রহর গুণছেন যাত্রীরা।

এ সময় ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা বলেন, সড়কে অন্যান্য অনেক যানবাহন চললেও তারা তো এমনটা করছেন না। কেবল যে সকল যানবাহনের বেপরোয়া ড্রাইভিং সড়কে দেখা যায় তারাই এসব আন্দোলন করছেন। এ থেকে তো মনে হয়- পরিবহন শ্রমিকরা হত্যার লাইসেন্স পেতেই সড়কে এমন নৈরাজ্য চালাচ্ছেন।

শ্রমিকদের অভিযোগ, নতুন মোটরযান আইন অনুযায়ী ৫ লাখ টাকা জরিমানা দেয়ার সাধ্য থাকলে কি আমরা গাড়ি চালাই। পার্কিংয়ের জায়গা নেই অথচ পার্কিং করলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা। তাহলে আমরা পার্কিংটা করব কোথায়? এই মানা অসম্ভব।

এরই মধ্যে শ্রমিকদের অবরোধের খবর পেয়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফ্লাইওভার এলাকায় আসেন কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। তিনি পরিবহন শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলে দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেয় শ্রমিকরা।

আন্দোলনের বিষয়ে কুমিল্লা জেলা বাস মালিক সমিতির মহাসচিব তাজুল ইসলাম বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে এমন সিদ্ধান্ত হয়নি। এটা পরিবহন ধর্মঘট নয়। দাউদকান্দি টোলপ্লাজায় ট্রাক লরির ধর্মঘট চলার সময় কুমিল্লা শাসনগাছা থেকে ছেড়ে যাওয়া এশিয়া ও তিশা পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসের ওপর হামলার পরিপ্রেক্ষিতে জেলা পরিবহন চালক ও হেলপারদের অঘোষিত ধর্মঘট চলছে। এটি কেন্দ্রীয় ধর্মঘট নয়। তাই অবরোধ তুলে নেয়া হয়েছে।

এদিকে, শ্রমিকদের সড়ক অবরোধের ফলে কুমিল্লা থেকে ঢাকামুখী সব যানবাহন বন্ধ রয়েছে। একই সঙ্গে বন্ধ রয়েছে ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার অংশে যান চলাচলও। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিস-আদালতগামী কর্মজীবী, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ।

প্রসঙ্গত, নতুন সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনের দাবিতে দেশের বিভিন্ন জেলায় পরিবহন ধর্মঘট চলছে। গত সোমবার থেকে কয়েকটি জেলায় শুরু হওয়া এই ধর্মঘটে বুধবার যোগ দিয়েছে বিভিন্ন জেলার পরিবহন শ্রমিকরা। এতে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। পূর্বঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ এমন ধর্মঘটে বিপাকে পড়েছেন বিভিন্ন রুটের যাত্রীরা।


সর্বশেষ সংবাদ