মাকে ভাইয়ের মৃত্যুর খবর জানাতে পারিনি

‘তূর্ণা নিশীথা ধাক্কা দেয়ার পর বিকট শব্দ হলে আমি মামাকে নিয়ে লাফিয়ে নিচে পড়ে যাই। এরপর ভাইকে খুঁজতে থাকি। কিন্তু খুঁজে পাইনি তাকে। সকালে ট্রেনের চাকার নিচ থেকে ভাইয়ের লাশ বের করা হয়। মাকে ভাইয়ের মৃত্যুর খবর জানাতে পারিনি আমি। ভাইয়ের মৃত্যুর খবর শুনলে মা মারা যাবেন।’

এভাবেই ট্রেন দুর্ঘটনার বর্ণনা দেন হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার মদনমোরাদ এলাকার মো. শামীম হোসেন। তিনি দুর্ঘটনাকবলিত উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী ছিলেন। শামীমের সঙ্গে ছিলেন তার ভাই ও মামা। এ দুর্ঘটনায় ভাইকে হারিয়েছেন শামীম।

মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) রাত পৌনে ৩টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশনে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা ও সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। আহত হয়েছেন শতাধিক যাত্রী।

শামীম বলেন, আমি ও আমার বড় ভাই আল-আমিন এবং মামা মনু মিয়া শায়েস্তাগঞ্জ স্টেশন থেকে উদয়ন এক্সপ্রেসে উঠেছিলাম। আমরা তিনজনই চট্টগ্রামে রজমিস্ত্রির কাজ করি। আসন না পাওয়ায় আমরা দরজায় দাঁড়িয়েছিলাম। ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথাকে সাইড দেয়ার জন্য আমাদের উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনটি মন্দবাগ স্টেশনে ঢোকার আগে দাঁড়িয়ে যায়। ১০ মিনিট দাঁড়ানোর পরও তূর্ণা নিশীথা যাচ্ছিল না। এরপর ধীরে ধীরে সামনের দিকে এগোতে থাকে উদয়ন এক্সপ্রেস। হঠাৎ করে তূর্ণা নিশীথা এসেই উদয়ন এক্সপ্রেসকে সজোরে ধাক্কা দেয়। ধাক্কা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে উদয়নের তিনটি বগি দূরে গিয়ে ছিটকে পড়ে। এ অবস্থায় উদয়ন ট্রেনটি তূর্ণা নিশীথার ওপর উঠে যায়। এ অবস্থায় দেখে মনে হচ্ছিল আমাদের উদয়ন ট্রেনটি উড়ছে।

তূর্ণা নিশীথা ট্রেনের যাত্রী নিহার বড়ুয়া বলেন, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় যাচ্ছিলাম। আমাদের ট্রেনটা ধীরগতিতেই যাচ্ছিল। আমরা মনে করেছিলাম ট্রেন লাইনচ্যুত হয়েছে। পরে দেখলাম উদয়নকে ধাক্কা দিয়ে দুমড়ে-মুচড়ে দিয়েছে। আমাদের ট্রেনের চালকের কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।


সর্বশেষ সংবাদ