থানার সামনে গাছতলায় ওসির ‘জনগণের দরবার’

  © সংগৃহীত

জনগণের আরও কাছাকাছি পুলিশকে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিকুর রহমান। ৩১ অক্টোবর থেকে তিনি দিনে থানার বাইরে বসছেন। সেখান থেকে বিভিন্ন অভিযোগ জানাতে এবং পরামর্শ নিতে পারছেন ভুক্তভোগীরা।

ঠাকুরগাঁও সদর থানায় গেলে দেখা যাবে, মূল ফটকের ভেতরে খোলা জায়গা পেরিয়ে থানার ভবন। আঙিনায় এক পাশে কাঁঠালগাছের নিচে সাইনবোর্ডে লেখা ‘জনগণের দরবার’। সামনে টেবিল-চেয়ার পেতে মানুষজনের কথা শুনছেন ওসি আশিকুর। সেখানে এসে ওসিকে কেউ জানাচ্ছেন ব্যক্তিগত অভিযোগ, কেউ বলছেন এলাকার নানা সমস্যার কথা।

আবার অনেকে অপরাধমুক্ত এলাকা গড়তে দিচ্ছেন নানা প্রস্তাব। ওসি সেসব অভিযোগ শুনে বিষয়গুলো তাৎক্ষণিকই সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

ওসি আশিকুর বলেন, ‘পুলিশের কাজ জনগণের সেবা করা, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু দুঃখের বিষয়, পুলিশের কাছে আসতে সাধারণ মানুষের মধ্যে জড়তা কাজ করে। জনগণের কাছাকাছি যাওয়ার লক্ষ্যে এই উদ্যোগ। এখন অনেকে স্বাচ্ছন্দ্যে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।’

২০০৩ সালে পুলিশের উপপরিদর্শক হিসেবে যোগ দেন আশিকুর রহমান। ২০১৩ সালে পরিদর্শক হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানার ওসি হিসেবে যোগ দেন।

কয়েকটি থানা ঘুরে ২০১৮ সালের ২৫ ডিসেম্বর ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি হিসেবে যোগ দেন তিনি।অপরাধ নির্মূলে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার স্বীকৃতি স্বরুপ ২০১৮ সালে পুলিশ বিভাগ থেকে পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি।

আশিকুর জানান, রংপুরের মিঠাপুকুর থানায় ওসির দায়িত্ব থাকার সময় খোলা আকাশের নিচে দাপ্তরিক কাজ শুরু করে বেশ সাড়া পান তিনি। পরে তিনি ঠাকুরগাঁও সদর থানায় বদলি হয়েছেন। এখানে আসার পর পুলিশভীতির পুরোনো চিত্র দেখতে পান। অনেকে থানায় ঢুকতে ভয় পান।

থানায় এলেও ওসির কক্ষে প্রবেশ করতে সাহস পান না। আসার সময় রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক, উকিল ধরেন। মানুষের ভয় কাটানোর জন্য তিনি বাইরে বসার পদক্ষেপ নেন। এতে মানুষ জানতে পারবে, পুলিশ তাঁদের বন্ধু, তাঁদের কল্যাণেই কাজ করেন।

ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, পুলিশ জনগণের পাশে থেকে কাজ করে। ওসি আশিকুরের উদ্যোগ পুলিশকে জনগণের আরও কাছে নিয়ে যেতে ভূমিকা রাখবে। এই উদ্যোগ জেলার অন্য সব থানায় ছড়িয়ে দিতে পদক্ষেপ নেয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ