কলেজের ঘর উঠছে এমপিওভুক্তির পর!

ধানক্ষেতে চলছে কলেজ ঘর তৈরীর কাজ
ধানক্ষেতে চলছে কলেজ ঘর তৈরীর কাজ   © সংগৃহীত

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর এমপিও ভুক্তির তালিকায় অন্তর্ভুক্তির সংবাদ পেয়ে রাতের আঁধারে পঞ্চগড়ের একটি প্রতিষ্ঠানে সাইনবোর্ড স্থাপন, ভবন নির্মাণসহ বিভিন্ন অবকাঠামো স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। বুধবার রাত থেকে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ঝলইশাল শিরি ইউনিয়নের নতুন হাট টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ নামের ওই প্রতিষ্ঠানের কাজ শুরু করে কর্তৃপক্ষ।

বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়। রাতারাতি ইট গেঁথে ভবনের ভিত্তি কাঠামো দাঁড়া করা হয়, টাঙিয়ে দেয়া হয় কলেজের নাম সম্বলিত সাইনবোর্ড।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পঞ্চগড় বিসিক নগর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের অধ্যক্ষ দেলদার রহমান এই কলেজ প্রতিষ্ঠিত করেছেন। স্থানীয়রা জানান, নামে থাকলেও এখানে ওই কলেজের কোন কার্যক্রম ছিল না। কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো দেলদারের কলেজ থেকেই। ক্লাসও হতো তার কলেজেই।

এ বিষয়ে ওই প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি দাবি করা দেলদার রহমান বলেন, এই প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ তার স্ত্রী শামীমা নাজনীন। তিনি জানান, ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠানটি স্থাপিত। বর্তমানে ওই প্রতিষ্ঠানে ২শ' ছাত্রছাত্রী পড়ছেন। শিক্ষক রয়েছে ৬ জন। চলতি এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় ৬০জন। পাস করে ৫৮ জন। কাগজে কলমে সব ঠিক রয়েছে বলে দাবি করেন দেলদার। রাতারাতি ভবন নির্মাণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার ঘর আমি যখন খুশি তখন ওঠাবো।

সাংবাদিকরা ওই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম ও শিক্ষক শিক্ষার্থীদের তথ্য দেখতে ও জানতে চাইলে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। তিনি বলেন, এর আগে টিন শেড ঘরে অধ্যায়ন কার্যক্রম চলতো। এছাড়া তার নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কলেজটির কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।

প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় জানান, প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি দেলদার রহমান পঞ্চগড়ের বিভিন্ন স্থানে নামে বেনামে একাধিক কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। তিনি প্রভাব খাটিয়ে প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত করেছেন। খবর নিয়ে জানা গেছে, পঞ্চগড় জেলায় এবার ৪টি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম এমপিওভুক্তির তালিকায় স্থান পায়।

মোহাম্মদ আজম নামে এক ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে মন্তব্য করেন, আমরা যেখানে এমপিও'র সকল শর্ত পূরণ করা সত্যেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে এমপিওভুক্ত হতে পারছি না। সেখানে এই রকম ভুঁইফোড়, অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠান কিভাবে এমপিও'র তালিকায় নাম আসে সেটাই প্রশ্ন। তিনি বিষয়টি আরও তদন্ত করে এমপিওভুক্তি চূড়ান্ত করার দাবি জানান।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হিমাংশু কুমার রায় সিংহ বলেন, এমপিওভুক্তির বিষয়ে আমাদের কোন ভূমিকা নেই। এমপি, সচিব ও মন্ত্রী উনারা কিভাবে এনপিওভুক্তির তালিকা দিয়েছেন তা তারাই ভাল জানেন।


সর্বশেষ সংবাদ