সব স্বীকার করলেন তুহিনের বাবা

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে শিশু তুহিনকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় তুহিনের বাবা আবদুল বাছির জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তিন দিনের রিমান্ড শেষে গতকাল বিকাল সাড়ে ৪টায় সুনামগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয় তুহিনের বাবা আবদুল বাছিরকে। সন্ধ্যায় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করেন আদালতের বিচারক মো. খালেদ মিয়ার। স্বীকারোক্তির তথ্য নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আবু তাহের মোল্লা।

তিনি বলেন, রিমান্ডে তুহিনের বাবা আবদুল বাছির ছেলে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদানের জন্য তাকে আদালতে তোলা হয়। তিন দিনের রিমান্ডে থাকা তুহিনের চাচা আবদুল মছব্বির ও জমসেদ আলীকে রিমান্ড শেষে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত সময়ে তুহিনের খুনিদের কঠোর শাস্তির দাবিতে সুনামগঞ্জে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বেলা ১১টায় শহরের ট্রাফিক পয়েন্টে শুভসংঘের উদ্যোগে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, আইনজীবী, সাংবাদিক, সংস্কৃতিকর্মী, শিক্ষক, ছাত্রসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। দিরাই উপজেলায় ইতিপূর্বে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে যত হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে সবকটির পুনঃতদন্তেরও দাবি জানানো হয়।

উল্লেখ্য, রবিবার রাতে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার কেজাউড়া গ্রামে রাতের আঁধারে ঘর থেকে তুলে নিয়ে পাঁচ বছরের শিশু তুহিনকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। ঘাতকরা তার লাশ রাস্তার পাশের একটি গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে। দুর্বৃত্তরা তুহিনের পেটে দুটি ছুরি ঢুকিয়ে রাখে। দুটি কান, এমনকি যৌনাঙ্গটিও কেটে ফেলে। সোমবার তুহিনের মা মনিরা বেগমের দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার তুহিনের বাবা আবদুল বাছির, চাচা আবদুল মছব্বির ও জমসেদ আলীর তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে খুনের ঘটনায় সম্পৃক্তার কথা স্বীকার করেছেন শিশু তুহিনের চাচা নাসির উদ্দিন ও চাচতো ভাই শাহরিয়া। সে সময় পুলিশ জানায়, মামলা-মোকদ্দমা নিয়ে পূর্বশত্রুতার জেরে বাবা-চাচাসহ স্বজনরাই পরিকল্পিতভাবে নৃশংসভাবে খুন করে লাশ গাছে ঝুলিয়ে রাখে।


সর্বশেষ সংবাদ