গলিতে এক মাসের শিশু ফেলে পালিয়ে গেলেন মা!

  © সংগৃহীত

পঞ্চগড়ের কামাতপাড়া মহল্লার একটি রাস্তা থেকে একমাস বয়সী কন্যাশিশুকে উদ্ধারের পর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ফুটফুটে শিশুটিকে দত্তক দিতে না পেরে তার মা গলিতে ফেলে পালিয়ে যান। শিশুটিকে দত্তক নিতে এখন অনেকেই হাসপাতালে ভিড় করছেন বলে জানা গেছে।

শিশুটি সুস্থ আছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সদর উপজেলার অমরখানার ভিতরগর এলাকার গৃহবধূ রিমু আক্তার দিনাজপুরের পার্বতীপুর এলাকার এক ট্রাকচালকের সঙ্গে দুই বছর আগে পালিয়ে যান। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রিমু তার নানা বাড়ি কামাতপাড়া এলাকায় এসে পেয়ারা বেগম নামের এক গৃহবধূকে কন্যাশিশুটিকে দত্তক নিতে অনুরোধ করেন।

তবে তিনি রাজি না হলে পাশের একটি গলিতে শিশুটিকে রেখে পালিয়ে যান রিমু। রাতে শিশুটিকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়।

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের চিকিৎসক সিরাজউদ্দোলা পলিন বলেন, শিশুটিকে হাসপাতালের শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়েছে এবং সুস্থ রয়েছে। এক প্রসূতি মাকে দিয়ে তার খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম শিশুটিকে দেখতে যান। পরে তারা শিশুটির মায়ের নানা বাড়ির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। তবে শিশুটির মায়ের কোনো খোঁজ পায়নি পুলিশ।

রিমুর মামা মো. মুক্তা বলেন, ‘দুই বছর আগে স্বামী-সংসার ছেড়ে ট্রাকচালকের হাত ধরে পালিয়ে যায় রিমু। এরপর তার কোনো খোঁজ করিনি। শুনেছি সে নাকি তার শিশুসন্তানসহ আমাদের বাসায় এসেছিল। পরে শুনছি কোলের শিশুটিকে রেখে সে পালিয়ে গেছে। কিন্তু বর্তমানে সে কোথায় আছে জানি না।’

গৃহবধু পেয়ারা বেগম বলেন, ‘সন্ধ্যায় রিমু আমাদের বাসায় শিশুটিকে দত্তক নিতে বলেন। বাসায় মেহমান আছে জানিয়ে শিশুটিকে নিতে চাইনি। পরে শুনলাম শিশুটি রেখে সে পালিয়ে গেছে।’

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী বলেন, ‘শিশুটিকে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে। সেখানে দুই নারী পুলিশ সদস্য রয়েছেন। আগে শিশুটির মাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। প্রকৃত অভিভাবককে খুঁজে পাওয়া গেলে তাদের হাতে শিশুটিকে তুলে দেওয়া হবে।’

জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘কোন মা নিরাপত্তার অভাবে শিশুটিকে এভাবে যদি রেখে যান, তা খুবই দুঃজনক। এই শিশুর ভবিষ্যতকে সুন্দর করা সবার দায়িত্ব, রাষ্ট্রেরও দায়িত্ব। শিশুটির উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য যা করা দরকার, তাই করার চেষ্টা করবো।’