যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীর গায়ে আগুন

  © সংগৃহীত

যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছেন স্বামী। এ অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে।

অভিযুক্তের নাম সহিদুল ইসলাম। তিনি কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কুড়িগ্রাম জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় ও অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূর পরিবারের সদস্যরা জানান, তিন বছর আগে রাজারহাট উপজেলার মেকুরটারি গ্রামের গুদামশ্রমিক সহিদুল ইসলামের সঙ্গে রংপুর শ্যামপুর কাটাবাড়ী গ্রামের ইসমত আরার বিয়ে হয়। ওই সময় মৌখিকভাবে ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দরিদ্র পরিবারের পক্ষে সেই টাকা দেওয়া সম্ভব হয়নি।

ইসমত আরা জানান, বিয়ের পরপর তাঁদের সংসার ভালোই চলছিল। তাঁদের একটি সন্তান আছে। কিন্তু সহিদুল ইসলাম অধিকাংশ সময় কাজ করতেন না। সংসারে অভাব অনটন লেগেই থাকত। তখন থেকে সহিদুল প্রায়ই যৌতুকের টাকা নিয়ে আসার জন্য চাপ দিতেন। এসব নিয়ে ঝগড়াঝাঁটি লেগেই থাকত।

সংসারের খরচ জোগাতে বাধ্য হয়ে ইসমত একটি এনজিও থেকে কাপড় কাটা এবং সেলাইয়ের ট্রেনিং নিয়ে সেখানেই কাজ করেন। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে টাকার জন্য তাকে চাপ দেন সহিদুল। টাকা না পেয়ে রাত তিনটার দিকে ঝগড়ার একপর্যায়ে মশারিতে ও ইসমতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন স্বামী সহিদুল ইসলাম।

এ সময় পাশের ঘর থেকে সহিদুলের বড় ভাই এসে ইসমতকে প্রথমে রাজারহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে সদর হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করেন।

কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক চিকিৎসক আবু মো. জাকিরুল ইসলাম জানান, ইসমত আরার অবস্থা কিছুটা ভালোর দিকে। তবে পুরোপুরি সুস্থ হতে সময় লাগবে। তাঁকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও ওষুধ দেওয়া হচ্ছে।

রাজারহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃষ্ণ কুমার সরকার জানান, সহিদুলের স্ত্রী ইসমত আরার মা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেছেন। বুধবার রাতেই আসামি সহিদুলকে উপজেলার পাশের একটি গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সহিদুলকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তিনি পুলিশের কাছে আগুন লাগানোর কথা স্বীকার করেছেন।


সর্বশেষ সংবাদ