এসিডের ভয়ে স্কুলে যাচ্ছে না মেঘলা

স্কুলছাত্রী মেঘলা আক্তার
স্কুলছাত্রী মেঘলা আক্তার  © সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে বখাটের এসিডের ভয়ে প্রায় একমাস থেকে বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না মেঘলা আক্তার। প্রেমের প্রস্তাব মেনে না নেয়ায় পৌরসভার গাড়াখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ফাস্টগার্ল মেঘলাকে এসিড মেরে মুখ জ্বালিয়ে দেয়ার হুমকি দিচ্ছে পাশের বান্দ্রা গ্রামের ফজল মিয়ার মাদকাসক্ত ছেলে মানিক (১৫) ও নুর মোহাম্মদের বখাটে ছেলে সাখাওয়াত হোসেন (২০)। মেঘলা বন্দটাকুরিয়া গ্রামের মো: মফিজুর রহমানের একমাত্র মেয়ে। এ ব্যাপরে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাচ্ছে না ভুক্তভোগী পরিবার।

জানা যায়, বখাটে সাখাওয়াত ও মানিক দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে মেঘলাকে উত্যক্ত করে আসছে। গত জুলাই মাসে ধনবাড়ী নবাব ইনস্টিটিউডে প্রাইভেট শেষে বাড়ি ফেরার পথে মেঘলাকে এসিডের বোতল ও চাকু দেখিয়ে ছবি তোলে সাখাওয়াত, মানিক ও তার বন্ধুরা। এই ঘটনার প্রতিবাদ করায় গত ১৫ আগস্ট মধুপুর আসার পথে মানিকদের বাড়ির কাছে মেঘলার বাবা-মাকে মারধর করে মানিক ও তার বন্ধুরা। এ ঘটনা প্রথমে স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর মো: তোতা মিয়াকে জানালে তিনি সালিসী মীমাংসার করে দিতে চাইলে টালবাহানা করতে শুরু করে অভিযুক্ত বখাটে সাখাওয়াত ও মানিকের পরিবার।

মেঘলা জানায়, বখাটে মানিক প্রথমে তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। এতে সে সাড়া না দিলে মানিকের বন্ধু সাখাওয়াতও তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। উভয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করার পর মানিক ও সাখাওয়াত উভয়ে মিলে মেঘলাকে এসিড নিক্ষেপের ভয় দেখাচ্ছে। ফলে গত ১৫ আগস্ট থেকে বিদ্যালয়ে যেতে পারছে মেঘলা।

ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী মেঘলার বাবা মো: মফিজুর রহমান জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম বেনু বখাটে মানিকের চাচাতো ভাই হওয়ায় এবং মানিকের বাবা ধনবাড়ী থানার ওসির বাসার কেয়ারটেকার হওয়ার কারণে তার মেয়েকে উত্যক্তের ঘটনার কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।

অভিযুক্ত বখাটে মানিকের বাবা ফজল জানান, জোর করে মেঘলার ছবি তুলে আমার ছেলে ভুল করেছে। সেজন্য তো মেয়ের বাবা মফিজ আমার ছেলেকে ‘মারধর’ করেছে। কিন্তু আমি কিছু বলিনি।

পৌর কাউন্সিলর মো: তোতা মিয়া জানান, ফেনীর নুসরাতের ঘটনা আমরা সবাই জানি। আমরা দ্বিতীয় নুসরাত দেখতে চাই না। ওসির সাথে আলোচনা করে অভিযুক্ত বখাটেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে গাড়াখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম (বেনু) জানান, বখাটেদের হাতে উত্যক্তের শিকার হওয়ার ঘটনাটি মেয়েটি (মেঘলা) আমাকে মুখে বলেছে। আমি তাকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছিলাম। কিন্তু দেয়নি। ছেলেটি যেহেতু বহিরাগত, তাই অভিযোগ পেলে ম্যানেজিং কমিটির সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গাড়াখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অধ্যাপক বেলাল উদ্দিন জানান, অভিযোগ পেলে ওসির সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা ধনবাড়ী থানার এসআই নূরে আলম জানান, উভয়পক্ষকে নিয়ে থানায় বসে মীমাংসা করে দেয়া হবে। এটাতে কাজ না হলে মামলা দায়ের করে অভিযুক্ত উক্তত্যকারীদের গ্রেফতার করা হবে।


সর্বশেষ সংবাদ