সবজি বিক্রেতা হৃদয়ের বাবা-মা নেই, থাকতেন নানীর কাছে

রেনু হত্যাকারী মো. হৃদয়। বয়স ১৯ বছর। পেশায় সবজি বিক্রেতা। বাবা-মা মারা গেছেন বেশ আগেই। বড় হয়েছেন নানীর কাছে। অনাথ এই কিশোরই আজ দেশের ‘টপ টেরর’ খ্যাতি পেয়েছে। সত্যিই কি সে সন্ত্রাসী? ব্যাকগ্রাউন্ড কী বলে? কিংবা হত্যার সময় পরিস্থিতিটাই বা কেমন ছিল? যদিও ইতোমধ্যে ‘ছেলেধরা’ সন্দেহে তাছলিমা বেগম রেনুকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রাথমিক দায় স্বীকার করেছে কিশোর হৃদয়।

অন্যান্য দিনের মতো শনিবারও সবজি নিয়ে বসেছিল হৃদয়। বিক্রি শেষে স্কুলের সামনেই দাঁড়িয়েছিল। এ সময় ভেতর থেকে এক নারীর কন্ঠে ছেলেধরা চিৎকার শুনতে পায়। অন্যদের সঙ্গে ছুটে যায় হৃদয়ও। ইতোমধ্যেই নারী ছেলেধরাকে স্কুলে আটক করা হয়েছে বলে আশেপাশের মানুষকে জানানো হয়। এরপর লাঠিসোটা নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে তাসলিমা বেগম রেনুর ওপর হামলে পড়ে হৃদয় ও অন্যান্যরা। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পূর্ব বিভাগের একটি টিমের কাছে আটকের পর হৃদয় এসব কথা জানিয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধায় তাকে নারায়ণগঞ্জের ভুলতা থেকে আটক করা হয়।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন বলেন, হৃদয়ের মা-বাবা বেঁচে নেই। নানীর কাছে থাকে। ঘটনার পর সে যখন বুঝতে পারল পুলিশ গ্রেপ্তার করবে তখন নারায়ণগঞ্জে পালিয়ে যায় এবং তার নানীকে বলে যেন তার সব পোশাক পুড়িয়ে দেয়া হয়।

গ্রেপ্তার হৃদয়ের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বাতেন বলেন, হৃদয় জানিয়েছে সে অন্য এক নারীর চিৎকার শুনে প্ররোচিত হয়ে রেনুর উপর হামলা করেছে। ঘটনার দিন রেনু স্কুলে প্রবেশ করলে সেখানে থাকা অন্য এক নারী অভিভাবক তার পরিচয় এবং বাসার ঠিকানা জানতে চান। তখন তিনি ওই নারীকে তার ঠিকানা জানান।

সে সময় ওই নারী তাসলিমাকে তাকে দেখিয়ে ছেলে ধরা বলে চিৎকার করেন। বিষয়টি হৃদয় দেখে। এরপর রেনুকে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। ততক্ষনে এ খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। যেহেতু স্কুলের কাছে বাজার তাই মুহুর্তে হাজারো মানুষ সেখানে ভিড় জমান। এদের মধ্যে কিছু দুর্বৃত্ত স্কুলের ভেতরে প্রবেশ করে তাসলিমাকে বের করে এনে গণপিটুনি দেয়। এতে করে তার মৃত্যু হয়।

পরিস্থিতি যাই হোক, যেভাবেই হোক, মা-বাবাহীন এতিম কিশোরই আজ দেশবাসীর কাছে শীর্ষ সন্ত্রাসী।


সর্বশেষ সংবাদ