মা ছাড়া তুবা শুধুই কাঁদছে (ভিডিও)

‘কত ব্যাথা বুকে চাপালে তাকে বলি আমি ধৈর্য?/ নির্মমতা কত দূর হলে জাতি হবে নির্লজ্জ? নির্মমতা যে লজ্জার সীমাও ছাড়িয়ে গেছে; তা আবারও প্রমাণিত হলো তুবার মায়ের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে। ছবিতে ফুটফুটে মেয়েটিকে কান্নারত দেখছেন, তার নাম তুবা। বয়স চার বছর। শনিবার এই মেয়েটির ভর্তির বিষয়ে রাজধানীর বাড্ডার একটি স্কুলে খোঁজ নিতে গিয়ে গণপিটুনির শিকার হয়ে নিহত হন তুবার মা তাসলিমা বেগম রেনু। ফুটফুটে শিশুটির সঙ্গী এখন শুধুই কান্না।

কান্নারত তুবা ক্ষনিকের জন্য হাসিখুশি থাকলেও অধিকাংশ সময়ই ঢুকরে ঢুকরে কেঁদে উঠছে। যেতে চাইছে মায়ের কাছে। মায়ের জন্য অবুঝ শিশুর এ চিৎকার ক’দিনই বা স্থানীয়রা শুনবে, আর কত দিনই বা দেবে সান্ত্বনা। 

জানা যায়, মেয়েকে ঘিরে মায়েরও ছিল আকাশ সমান রঙ্গিন স্বপ্ন। এজন্যই এক বছর ধরে বাংলা বর্ণমালাগুলোর সঙ্গে মেয়ের পরিচয় করানোর মায়ের অসীম চেষ্টা ছিল।  আমেরিকায় যাওয়ার জন্য তার সব কাগজপত্র প্রস্তুত ছিল। ইতোমধ্যে গ্রিনকার্ড পেয়েছিলেন বাড্ডায় নৃশংসতার শিকার তাসলিমা বেগম রেনু। সামনের বছর চলে যাওয়ার কথা ছিল। তার বড় ভাই বিষয়টির সব কিছু সম্পন্নও করে রেখেছিলেন। ছোট মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করাতে গিয়ে সবশেষ হয়ে গেছে তার।

এদিকে রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রেনুর নামাজের জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। জানাজায় নিহতের আত্মীয়-স্বজনসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ নেন।

পরিবারের সদস্যরা জানান, পারিবারিক কলহের কারণে প্রায় দুই বছর আগে স্বামী তসলিম হোসেনের সঙ্গে রেনুর ডিভোর্স হয়। তাদের সংসারে তাসফিক আল মাহি (১১) ও তাসলিমা তুবা নামের দুই সন্তান রয়েছে। বিচ্ছেদের পর ছেলে বাবার সঙ্গে থাকে। আর মেয়ে মায়ের সঙ্গে ছিল। রেনু মহাখালীতে বাসা ভাড়া করে থাকতেন।

নিহত রেনুর আত্মীয় নুর জাহান বেগম মুন্নি বলেন, তুবা শুধু বলে, আমার মা নেই, আমার মা কই? এটি তার অবুঝ মনের বলা। সে কান্নাকাটি করছে। তুবা এখন আমাদের কাছেই থাকবে। তার ভাগ্যে কী আছে আল্লাহ ভালো জানেন।


সর্বশেষ সংবাদ