স্কুলে মেয়েকে ভর্তির খোঁজ নিতে গিয়ে গণপিটুনিতে লাশ হলেন রেণু

  © সংগৃহীত

আগামী জানুয়ারি মাসে আমেরিকায় যাওয়ার কথা ছিল গণপিটুনিতে নিহত তাসলিমা বেগম রেনুর (৪০)। কিন্তু মেয়েকে ভর্তির জন্য স্কুলে খোঁজ নিতে গিয়ে নিহত তিনি। সেখানে তার একমাত্র ভাই আলী আজগর ২৩ বছর ধরে বসবাস করছেন।

কিন্তু একটি গুজবেই শেষ হয়ে গেল তাসলিমার সব স্বপ্ন। ছেলেধরা গুজবে গণপিটুনির শিকার হয়ে জীবনটাই দিতে হয়েছে তাঁকে। কথাবার্তা সন্দেহজনক—শুধুমাত্র এই অজুহাতে স্কুলের বাইরে এনে তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

আমেরিকা যেতে রেনু সব প্রস্তুতি গুছিয়ে নিয়েছেন। মারা যাওয়ার দিন সকালে বাসা থেকে বের হওয়ার সময় তিনি জাতীয় পরিচয়পত্র ফটোকপি করার জন্য নিয়ে বের হন। ওই দিন ছোট মেয়েকে খালার কাছে রেখে যান।

রোববার (২১ জুলাই) বিকেলে তাসলিমার লাশ নিয়ে যাওয়া হয় লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার সোনাপুরে গ্রামের বাড়িতে। তাসলিমার এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না তাসলিমার পরিবারের সদস্য ও গ্রামবাসী।

তাসলিমার চাচাতে ভাই মোক্তার হোসেন বলেন, দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য একটি চক্র গুজব ছড়াচ্ছে। আর এর বলি হচ্ছে সাধারণ মানুষ, আমার বোনরা। বিবেক শক্তি লোপ পেয়ে আমরা দিন দিন অসভ্য হয়ে যাচ্ছি। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

তাসলিমার বোন সেলিনা আক্তার বলেন, তাসলিমা ছোটবেলা থেকেই বাবার সঙ্গে ঢাকায় বসবাস করতেন। উত্তর বাড্ডা এলাকার তসলিম উদ্দিনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তাহসিন আল মাহিন ও তুবা তাহসিন নামে তাঁদের দুই সন্তান আছে। বছর দু-এক আগে পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় তাসলিমার।

গুজব ছড়িয়ে তাসলিমাকে হত্যার ঘটনায় শনিবার (২০ জুলাই) রাতে বাড্ডা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন তাসলিমার ভাগনে নাসির উদ্দিন। মামলায় অজ্ঞাত প্রায় ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ