হয়তো আজ পত্রিকার শিরোনাম হত ‘চলন্ত বাসে তরুণী ধর্ষণ’

  © সংগৃহীত

এবার চলন্ত বাসে যৌন হয়রানির হাত থেকে একটি মেয়েকে বাঁচিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র। শনিবার রাত দশটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলের ছাত্র রাকিবুল হাসান ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ওই ঘটনার বিবরণও দিয়েছেন। তিনি হল শাখা ছাত্রলীগের আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক।

রাকিবুল হাসানের ফেসবুক স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো।

‘হয়তো কালকের খবরে নিউজ হতে পারতো - ‘#চলন্ত- #বাস- #এ #ধর্ষণ’

#ওয়েলকাম বাস ( #ঢাকা #মেট্রো-#ব ১১৯৪০২)
রাত ১০ টার দিকে নবীনগর থেকে বাস এ উঠি, তখন বাস ভর্তি ছিল। সাভারে এসে সবাই নেমে যায়। বাস এ ছিলাম মাত্র আমি সহ তিনজন।

সামনের ড্রাইভার এর পাশে মহিলাদের সংরক্ষিত সিটে একটি মেয়ে বসা ছিল। আমিন বাজারের আগে অন্ধকারাচ্ছন্ন রাস্তা, বাসের কন্ট্রাক্টর মেয়েটির পাশে গিয়ে বসলো, আমি বাসের বাম সাইডের ৪ নং রোতে বসা,আরেকজন ডান সাইডে মাঝামাঝি বসা; ঘুমাচ্ছিলো।

হঠাৎ মেয়েটি চিৎকার দিয়ে উঠলো,আমি দাঁড়িয়ে বললাম কি হলো? মেয়েটি বললো- এই লোক আমার পাশে বসে আমাকে জড়িয়ে ধরছে...

এইবার কন্ট্রাকটর বলতেছে, আপনি বসেন ভাই। এই মেয়ের মাথায় সমস্যা আছে, ড্রাইভার বলতেছে- কিছুনা ভাই, ছাতা চাইছিল (যদি ও তখন বৃষ্টি নাই)। আমাকে বলতেছে আপনার কোন সমস্যা ভাই?

ততক্ষণে বাসের আরেকজন যে ছিল উনার ও ঘুম ভেঙে যায়। দুজন মিলে মেয়েটি কে ড্রাইভার এর পাশের সিট থেকে আমাদের সামনে এনে বসাই (১ম ছবিতে) আরেকটু যাওয়ার পর তারা আর যাবে না, মাঝপথে ভাই নেমে যান, যাবো না।

বললাম কেন? তারা বললো, ‘আমাদের ইচ্ছা। (মেয়েকে সেইফ করার জন্য বললাম) বুঝছি ভাই,মেয়ের মানসিক সমস্যা আছে। আপনি যান।

আরেকটু সামনে গিয়ে তেল নেওয়ার জন্য থামালো, নিচে নেমে তখন গাড়ির নাম্বার দেখলাম। ছবি তোলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলাম। পরে উপরে উঠে ঐ কন্ট্রাকটর এর ছবি নিলাম তার অজান্তে (যদিও ক্লিয়ার না) ততক্ষণে সে বুঝে ফেলে,আমি ও সাথে সাথে ডিলেট করে দিলাম, আমার ফোন ও চেক করা হলো।

কিছু করার ছিল না, আমরা মেয়েসহ তিনজন, তারাও তিনজন... এলাকাও তাদের সিন্ডিকেটদের। পরে আমাদের গাবতলীর আগেই নামিয়ে দেয়। বললো নেমে যান ভাই, আর যাবে না। (পাশে কোন দোকানপাট , মানুষ কিংবা পুলিশ বক্স কিছুই ছিলো না) বাসে থাকতে ৯৯৯ এ কল দিবো,সেই সুযোগ ও ছিলো না।

মেয়েটি যাবে মাজার রোড পর্যন্ত, পরে আমরা ঐ মেয়ে কে সাথে করেই নামি। নামার পর শুনলাম, বলাবলি করতেছ- ওস্তাদ, কাজটা হইলো না।

মেয়েকে পরে মাজার রোড এনে ঐ লোকসহ বাসার জন্য রিক্সায় তুলে দেই। (কাছেই ছিলো, বললো যেতে পারবে)।

মেয়ের নাম্বার+আরেকজন যে ছিলো, তাদের নাম্বারও রেখে দিলাম (যদিও চার্জ না থাকায় তখন মেয়ের নাম্বার বন্ধ ছিল)

এইসবের শেষ কোথায়? সামাজিক আন্দোলন জোরদার করা দরকার। প্রশান্তির জায়গা ‘মেয়েটিকে হয়তো সেইফ করতে পারছি’। অনুশোচনার জায়গা ‘লম্পটদের কিছুই করতে পারলাম না’। মাথা তখন কোন কাজই করে নাই।

নিজ নিজ জায়গা থেকে প্রতিরোধ, প্রতিবাদ গড়ে তোলা উচিত।’


সর্বশেষ সংবাদ