মিন্নির ভূমিকা কেন প্রশ্নবিদ্ধ, কলেজ সিসিটিভি’র নতুন ফুটেজ

রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ড ও আয়শা আক্তার মিন্নিকে নিয়ে চলমান বিতর্ক যেন থামছে না। একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য যেমন আসছে, তেমনি আসছে নতুন নতুন সব ভিডিও।  তবে সবকিছুকে ছাপিয়ে যে বিষয়টি আলোচনায় উঠে এসেছে, তা হলো- হামলার সময় মিন্নির ভূমিকা নিয়ে। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সমালোচনা হচ্ছে। মন্তব্য আসছে মিন্নির প্রশংসা করেও।

এদিকে হামলার আগে ও পরের ঘটনা নিয়ে বরগুনা সরকারি কলেজের সিসিটিভি ফুটেজ থেকে নতুন একটি ভিডিও উদ্ধার করা হয়েছে। যাতে দেখা গেছে, রিফাত কলেজের সামনে রাখা বাইকে মিন্নিকে উঠতে বললেও মিন্নি তাতে উঠতে রাজি না হয়ে উল্টো কলেজ গেইটের দিকে চলে আসেন। রিফাতও মিন্নিকে বাইকে তুলতে জোর করেন। এ সময় উপস্থিত লোকজন উভয়ের টানাটানির দৃশ্য দেখতে থাকেন। এর ঠিক এক মিনিট পরেই নয়ন বন্ডের সতীর্থতারা চলে আসে। টেনে নিয়ে যায় রিফাতকে। মিন্নিও তাদের পেছন পেছন ছুটতে থাকে। এক পর্যায়ে রিফাতকে আঘাত করা শুরু করলে তাতে বাঁধা দেয় মিন্নি। যদিও তাতে শেষ রক্ষা হয়নি।

একজন বলছেন, ভিডিওর তথ্যমতে, কোপানার এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যাওয়ার পর রিফাত একদিকে চলে যায়। অন্যদিকে মিন্নি তখনও দাঁড়িয়ে ছিল। যদিও তাদের পরবর্তী অবস্থানের তথ্য ফুটেজে ধারণ নেই।

তবে পুরো বিষয়টির ব্যাখা দিয়েছেন মিন্নি। বলেছেন, রিফাত আমাকে বলে, আব্বু আসছেন, চলো তোমার সাথে দেখা করবে। আমি ওরে বলছিলাম আমার কাজ শেষ করে বের হই, ও আপত্তি করে বলে, বাবা গেটে অপেক্ষা করছে, আমি তখন ওর সাথে বের হই। গেটের বাইরে এসে এদিক ওদিক তাঁকিয়ে দেখি ওর বাবা কোথাও নেই। তখন আমি বলি— তুমি মিথ্যে বলেছ, চলো রুটিন নিয়ে আসি। আমি ওরে নিয়ে ভেতরে যেতে চাই।

মিন্নি আরো বলেন, ঠিক তখন ১০-১২ জন আমাদের ঘিরে ধরে। রিশান ফরাজী ওর পথরোধ করে বলে, তুই আমার বাবা মা তুলে গালি দিছিস? ও বলে না, তখন রিফাত ফরাজী এসে বলে আমার চোখের দিকে তাঁকিয়ে বল। এরপর আরো কয়েকজন ওকে জোর করে সামনে নিয়ে যায়।

ভিডিও সম্পর্কে মিন্নি বলেন, ঘটনার আকস্মিকতায় আমি হতভম্ব হয়ে ওদের পেছনে হাঁটতে থাকি। পরে ওরা আক্রমণ করলে প্রতিরোধের চেষ্টা করি। অনেকের কাছে হেল্প চাইছি, কেউ আসেনি। ওরা চলে যাওয়ার পর রিফাত নিজেই হেঁটে রিকশায় ওঠে, আমার পা কেটে যাওয়ায় হাঁটতে পারছিলাম না, তাই জুতা পায়ে দেই। তখন একজন আমার হাতে ব্যাগ তুলে দেয়। পরে আমি দ্রুত রিফাতকে নিয়ে হাসপাতালে যাই। ওই সময় দুজন মোটরসাইকেল নিয়ে আমাদের রিকশা ফলো করছিলো।

বিতর্ক প্রসঙ্গে মিন্নি বলেন, কেউ কেউ বিষয়টি ভিন্ন দিকে নেয়ার চেষ্টা করছে। আমি বলবো, বিয়ের মাত্র দুই মাসের মাথায় স্বামীকে নির্মমভাবে খুন হতে দেখেছি। মানসিকভাবে আমি প্রচণ্ড বিধ্বস্ত। আপনাদের কাছে অনুরোধ, আমি তো আপনাদের মেয়ে। আপনারা না জেনে কোনো মন্তব্য কইরেন না। এ মুহূর্তে আমার পাশে কেউ নেই, আমি সবাইকে পাশে চাই।

 


সর্বশেষ সংবাদ