শহরের দেয়ালে দেয়ালে ‘০০৭’— পুলিশ বলছে তথ্য নেই

‘০০৭’ একটি ফেসবুক গ্রুপের নাম। বরগুনায় দিন-দুপুরে রিফাত শরীফকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করা হয় এই গ্রুপের মাধ্যমে। ওই গ্রুপে কে কখন কি অস্ত্র নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হবে তার নির্দেশনা দেয়া হয়। নির্দেশনা অনুযায়ী গত বুধবার সকালে রিফাতকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

ওই ফেসবুক গ্রুপের কথোপকথনের স্ক্রিনশটে দেখা যায়, ঘাতক রিফাত ফরাজী ঘটনার আগের দিন রাত ৮টার দিকে ম্যাসেঞ্জার ‘০০৭’ গ্রুপের সদস্যদের পরদিন সকাল ৯টায় সরকারি কলেজের সামনে থাকার নির্দেশ দেয়। বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্র জেমস বন্ডের নামের সঙ্গে মিলিয়ে এ গ্রুপের নাম রাখা হয় ‘০০৭।’ এ ম্যাসেঞ্জার গ্রুপটির নেতৃত্বে ছিলেন রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের অন্যতম প্রধান আসামি নয়ন বন্ড।

বন্ড অংশটি নয়ন নিজেই নিজের নামের সঙ্গে জুড়ে দেন। বরগুনার এ হত্যাকাণ্ডের পর ‘০০৭’ নামের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার গ্রুপের নাম সবার সামনে আসে। এরপর থেকে দেশব্যাপী আলোচনায় চলে আসে ‘০০৭’ নামের এ ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার গ্রুপের নাম।

এরই মধ্যে হঠাৎ করে দুদিন ধরে কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন দেয়ালে দেয়ালে ইংরেজিতে ‘০০৭’ লেখা দেখা যাচ্ছে। কোনো কোনো দেয়ালে মানুষের হাসির দুটি ইমো দিয়ে শেষে ইংরেজিতে ‘৭’ লেখা হয়েছে। শহরের কমলাপুর এলাকাসহ বিশেষ করে পুলিশ লাইনের আশেপাশের দেয়ালগুলোতে ‘০০৭’ লেখা দেখা যায়। এমনকি পুলিশ লাইনের দেয়ালেও ‘০০৭’ লেখা রয়েছে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুইদিন ধরে হঠাৎ করে বিভিন্ন দেয়ালে ‘০০৭’ লেখা দেখা যাচ্ছে। তবে কে বা কারা কি উদ্দেশ্যে দেয়ালগুলোতে ‘০০৭’ লিখেছেন এ ব্যাপারে কেউ কোনো সঠিক ধারণা দিতে পারছেন না। তবে অনেকেই ধারণা করছেন বরগুনার আলোচিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর ‘০০৭’ নামের ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপের নাম ছড়িয়ে পড়ায় স্কুল-কলেজ কিংবা স্থানীয় কিছু বখাটে দেয়ালগুলোতে ‘০০৭’ লিখেছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত বলেন, কে বা কারা এসব লিখেছে এ ব্যাপারে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। বিষয়টি আমাদের নজরে আসেনি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখব।

পড়ুন: ঢাবির ক্যান্টিনে ৪৫ কেজি পচা মাছ-মাংস, জরিমানা ৫০ হাজার টাকা

মঙ্গলবার ভোর সোয়া ৪টার দিকে বরগুনার পুরাকাটার পায়রা নদীর পাড়ে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন রিফাত হত্যার অন্যতম প্রধান আসামি সাব্বির হোসেন নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড।

পুলিশের দাবি, ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, এক রাউন্ড গুলি, দুটি শটগানের গুলির খোসা এবং তিনটি দেশীয় ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় এএসপি শাজাহানসহ চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

প্রসঙ্গত, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্ত্রী মিন্নিকে বরগুনা সরকারি কলেজে নিয়ে যান রিফাত। কলেজ থেকে ফেরার পথে মূল ফটকে নয়ন, রিফাত ফরাজীসহ আরও দুই যুবক রিফাত শরীফের ওপর হামলা চালান। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিফাত শরীফকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন তারা।

পড়ুন: কলেজছাত্রীকে ব্লেড দিয়ে হামলা যুবকের, হাসপাতালে ভর্তি

রিফাত শরীফের স্ত্রী মিন্নি দুর্বৃত্তদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছুতেই হামলাকারীদের থামানো যায়নি। তারা রিফাত শরীফকে উপর্যুপরি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে চলে যান। পরে স্থানীয় লোকজন রিফাত শরীফকে গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে রিফাত শরীফের মৃত্যু হয়।

পড়ুন: নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও শিক্ষার্থী ভর্তি করছে ৩২ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়


সর্বশেষ সংবাদ