অপকর্মে দণ্ডিত প্রধান শিক্ষক, ক্লাস বয়কটে ছাত্র-ছাত্রীরা

নারী কেলেংকারীসহ নানা দুর্নীতির সাথে জড়িত থাকার দায়ে মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান খাসমহল বালুচর উচ্চ বিদ্যালয়ের বহিষ্কৃত প্রধান শিক্ষক ত্রিশালের একটি বিদ্যালয়ে সম্প্রতি নিয়োগ পাওয়ার পর সোমবার থেকে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বয়কট কর্মসূচী গ্রহন করেছে। এ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে পড়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

প্রাপ্ত অভিযোগ এলাকাবাসী ও ছাত্র-ছাত্রীরা জানায়, ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার মোহাম্মদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে সম্প্রতি নিয়োগ প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবু মোতাহার মো. নিয়ামূল বাক্কী বিদ্যালয়ের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত থেকে নানা দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহণ করেছে।

অভিযোগ রয়েছে, গত ২৬ জানুয়ারি স্বপদে যোগদান করার পর থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট থেকে রেজিঃ ফি ৬০টাকা নেওয়ার কথা থাকলেও তিনি প্রতি রেজিঃ ফি বাবদ ৪শ টাকা আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন অফিস সহকাকারীকে। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হুমায়ন কবীরের কাছ থেক ঘুস না পেয়ে তার এমপিও মাসের পর মাস ঘুরিয়ে ভোগান্তিতে রাখবেন বলে হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। বিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের হিসাব-নিকাশ না দিয়ে তিনি তার ইচ্ছামত খরচ করে যাচ্ছেন।

বিদ্যালয়ের অপর একটি সূত্র থেকে জানা যায়, এ প্রধান শিক্ষক তার পূর্ব কর্মস্থলে দৈহিক অপকর্মে লিপ্ত হয়ে ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়েন। এসব পাওনাদাররা প্রায়ই তাগিদ দিতে বর্তমান কর্মস্থলে আসেন। অনেক পাওনাদার তার পূর্বের সকল তথ্য ফাস করে দেয়। পূর্ব কর্মস্থলে এ প্রধান শিক্ষক স্কুলের একটি কক্ষে পতিতা নিয়ে রাত্রিযাপনকালে জনতা হাতে নাতে ধরে পুলিশে সোপর্দ করে। এ ব্যপারে সিরাজদিখান থানায় একটি মামলা রুজু করা হয় যার নং ০৬/১৮।

অতঃপর সংশ্লিষ্ট পেনাল কোর্টে এ অপকর্মের জন্য তিনি অর্থ দণ্ডে দণ্ডিত হন। এ ধরনের নানা অপকর্মের জন্য তিনি স্বপদ থেকে বহিঃকৃত হন। পতিতার সাথে তার রাত্রিযাপনের ভিডিও ফুটেজ ও স্থিরচিত্র বর্তমান কর্মস্থলে ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর ছাত্রীরা আতংকে আছেন। এ বিদ্যালয়েও অভিযুক্ত শিক্ষকের অনেক ছাত্রীকে অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে আবেদনময়ী ভাষায় কথা বলারও গুঞ্জন রয়েছে।

ছাত্র- ছাত্রীরা সোমবার এ শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে ক্লাস বয়কট করে রাস্তায় নেমে আসে। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু সঈদ ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ প্রশাসন ও ম্যানেজিং কমিটির সাথে আলোচনা করে বিষয়টি সুরাহা করার প্রস্তাব দিয়ে ঘটনা নিয়ন্ত্রনে আনে। অভিযোগ রয়েছে তিনি পুর্ব কর্মস্থলে নানা অপকর্ম থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রন্থ হয়ে ঋণ গ্রস্থ হয়ে পড়েন। যার দেনা শোধ করার জন্য তিনি এ বিদ্যালয়ে ব্যাপকহারে দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহন করেছেন।

অভিভাবকদের দাবী এ প্রধান শিক্ষক অত্র বিদ্যালয়ে স্বপদে থাকলে তারা তাদের ছেলেমেয়েদের অন্য স্কুলে ভর্তি করার ব্যবস্থা করবে। স্থানীয়রা জানায় এ বধ মেজাজী প্রধান শিক্ষক এখানে কর্মরত থাকলে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই বিদ্যালয় ছাত্র-ছাত্রী শূন্য হয়ে পড়বে। এদিকে নারী কেলেংকারীর দায়ে আদালতে দণ্ডিত হওয়ার পাশাপাশি নানা অপকর্মের দায়ে এক স্কুলের বহিষ্কৃত প্রধান শিক্ষক অন্য স্কুলে নিয়োগ পাওয়ায় জনমনে প্রশ্ন উঠেছে একজন চরিত্রহীন চরিত্রবানের চারিত্রিক সনদপত্র পেল কিভাবে।


সর্বশেষ সংবাদ