দীর্ঘায়িত হচ্ছে বেকারত্ব সংকট, যে সমাধানের কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

  © বিবিসি

করোনাভাইরাস মহামারি কবে শেষ হবে, তা এখনো সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না কেউ। বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, মহামারির কারণে আর্থিক মন্দা বহাল থাকবে আরো কিছুদিন, যার প্রভাব ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি পড়বে চাকরির বাজারেও।

আইএলও’র একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে এসে আগামী তিন মাসের মধ্যে সাড়ে ১৯ কোটি মানুষ তাদের পূর্ণকালীন চাকরি হারাতে যাচ্ছে। বর্তমানে বিশ্বের পূর্ণ বা খণ্ডকালীন মোট কর্মশক্তির প্রতি পাঁচজনের মধ্যে চারজনের পেশা কোন না কোনভাবে কোভিড-১৯ এর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই ক্ষতির শিকার বড় একটি অংশ তরুণ-তরুণীরা।

আইএলওর মহাপরিচালক গাই রাইডার বলেছেন, জরুরিভিত্তিতে তরুণদের জন্য উল্লেখযোগ্য কিছু করা না গেলে এই ক্ষতির জের টানতে হতে পারে পরবর্তী কয়েক দশক ধরে।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের প্রধান নির্বাহী ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, নতুন চাকরি তো নেই, যারা ছিল, তাদের ছাঁটাই করা হচ্ছে। তার সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়ছে তরুণদের ওপর। যতদিন পর্যন্ত অর্থনীতি ঠিক না হবে, ততদিন তাদের সবার শ্রমবাজারে প্রবেশ করাটা কঠিন হবে।

তিনি বলেন, ‘এমনকি করোনা পরবর্তী সময়েও যেসব কাজের সৃষ্টি হবে, সেগুলোর ধরণ কিন্তু অন্যরকম হবে। এখন যেমন বেশিরভাগ কাজকর্ম ঘরে বসে হচ্ছে। ফলে ডিজিটাল বা আইটিবেজড কাজ বেশি হবে। ফলে আগের গতানুগতিক শিক্ষা দিয়ে চাকরি পাওয়া যাবে না। বাজার উপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থা ও প্রশিক্ষন, সেই সঙ্গে প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষার দরকার হবে।’

সেই সঙ্গে তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলছেন, যুবকদের এই সমস্যা ও সংকটের ব্যাপারে এখনি গুরুত্ব দেয়া শুরু করা উচিত। দীর্ঘদিন শ্রমবাজারের বাইরে অনেকদিন থাকলে তাদের মধ্যে হতাশার জন্ম নেবে, সামাজিক একটা প্রভাব তৈরি করবে। এর ফলে যে শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে, তাই নয়, এর ফলে সমাজের ওপরেও সামগ্রিকভাবে একটা প্রভাব পড়বে।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যারা গত কয়েক বছরের মধ্যে পড়াশোনা শেষ করেছেন, নতুন চাকরির চেষ্টা করছেন, তাদের উচিত হবে শুধুমাত্র কাঙ্খিত চাকরির জন্য বসে না থেকে যা পাওয়া যায়, সেটা দিয়েই কর্মজীবন শুরু করা।

বিডিজবসের প্রধান নির্বাহী মাশরুর বলেন, ‘ট্রাডিশনাল চাকরি অনেক কমে যাবে। সবাই যদি সরকারি, বড় প্রতিষ্ঠানে বা অফিসিয়াল চাকরির খোঁজেন, তাহলে হবে না। যেকোন ধরনের চাকরি পেলেই সেটা শুরু করে দিতে হবে।’

গ্রীন এইচআর প্রফেশনালের রওশন আলী বুলবুল বলেন, ‘নতুন গ্র্যাজুয়েটদের প্রচলিত শিক্ষার ওপর নির্ভর করে না থেকে তাদের কোয়ালিটি বৃদ্ধি করতে হবে। বেকার থাকার চেয়ে বেগার খাটা ভালো। এই দুঃসময়ে বসে না থেকে, যা পান, তাই নিয়ে শুরু করে দিন, অভিজ্ঞতা হোক। পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি অন্য চাকরির জন্য চেষ্টা করতে পারেন।’ খবর: বিবিসি বাংলা।


সর্বশেষ সংবাদ