তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগও দেবে পিএসসি!

পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) অধীনে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের পরিকল্পনা করছে সরকার। এ–সংক্রান্ত একটি চিঠি সরকার থেকে পিএসসিতে পাঠানো হয়েছে। পিএসসি বলছে, তারা এ–সংক্রান্ত চিঠিপত্র পেয়েছে এবং এটি নিয়ে কাজ করছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ক্যাডার) নেছার উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘চিঠি পিএসসি পেয়েছে। সেই চিঠি আলোচনার জন্য কমিশনে উঠবে। এর পর এ বিষয়ে আলোচনা হবে। আমরা এই চিঠি নিয়ে কাজ শুরু করেছি।’

পিএসসি সূত্র জানায়, সরকার তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের জন্য পিএসসিকে দায়িত্ব দিতে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বিষয়ে সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ বিভাগ থেকে একটি চিঠি পিএসসিতে পাঠিয়েছে। পিএসসি এই চিঠি নিয়ে কাজ করা শুরু করেছে। এটি বাস্তবায়ন হলে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের জন্য কোনো মন্ত্রণালয়কে আর নিয়োগের ঝামেলা পোহাতে হবে না। শুধু জনবল নিয়োগের প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় চাহিদাপত্র দেবে। চাহিদা অনুসারে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করে পিএসসি সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে।

তবে এই উদ্যোগ নেওয়া হলে পিএসসির কাজের চাপ বাড়বে বলে মনে করেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার। তিনি বলেন, বর্তমান পিএসসি যেসব কাজ করছে তাতে তাদের ওপর অনেক কাজের চাপ। একেকটি বিসিএসের কাজ শেষ করতে তাদের অনেক সময় দরকার হচ্ছে। তাদের তৃতীয়–চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের দায়িত্ব দিলে সার্বিক কাজের চাপ বাড়বে। নিয়োগ বিলম্বিত হতে পারে।

চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসির একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, তাঁরা এটি নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছেন।

সরকারি সূত্র জানায়, সরকারি চাকরিতে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদে নিয়োগের লক্ষ্যে ভিন্ন ভিন্নভাবে সারা বছর নিয়োগপ্রক্রিয়া চলে। এসব নিয়োগের জন্য মন্ত্রণালয়কে একটি বড় সময় ব্যস্ত থাকতে হয়, এতে অন্যান্য কাজের গতি নষ্ট হয়। এ ছাড়া এতে সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাসহ রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের ঘটনা ঘটে। পছন্দের লোক নিয়োগের জন্য তদবির আসে এমনকি অর্থ লেনদেনের ঘটনাও ঘটে।

চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষা পিএসসি নিলে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না বলে মনে করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন সাবেক সচিব। তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের জন্য মন্ত্রণালয়গুলোকে অনেক বেগ পোহাতে হয়। নানা তদবির আসে। অনেক সময় তা এড়িয়ে যাওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। পিএসসি এসব পরীক্ষা নিলে তা হবে না। তবে এটি নিয়োগের জন্য পিএসসির জনবল বৃদ্ধি করতে হবে। না হলে কাজের গতি ব্যাহত হতে পারে। (সূত্র: প্রথম আলো)


সর্বশেষ সংবাদ