চিত্রনায়ক এখন গাউছিয়া মার্কেটের কাপড় ব্যবসায়ী

  © ফাইল ফটো

ঢাকাই সিনেমার এক সময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা শাহিন আলম। যদিও লিড চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ তেমন একটা পাননি। তবে সেকেন্ড লিড চরিত্রে দাপিয়ে অভিনয় করেছেন। কিন্তু আদরের মেয়ের আত্মহত্যার খবরে বদলে যায় তার জীবন। অভিনয় ছেড়ে দিয়ে বনে যান ব্যবসায়ী। রাজধানীর গাউছিয়া মার্কেটে রয়েছে তার কাপড়ের দোকান।

শাহিন আলম শেষবারের মতো ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন ‘দারোয়ানের ছেলে’ ছবির জন্য। ছবিটির পরিচালক ছিলেন রকিবুল আলম। শেষের দিকে কাজী হায়াতের অনুরোধে দু-একটি ছবিতে কাজ করেছেন। তাঁরও আগেই থেকেই তিনি অভিনয় থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন।

প্রায় দেড়’শ ছবিতে অভিনয় করেছেন শাহিন আলম। এর পর ব্যবসায় মনোযোগ দেন। অভিনয়ের পাশাপাশি গার্মেন্টসের ব্যবসা করতেন। অভিনয় ছাড়ার পর পুরোপুরি সেখানেই মন দেন। কিন্তু গার্মেন্টসের ব্যবসায় সুবিধা করে উঠতে পারেননি। অভিনয় ছাড়ার পর গাউছিয়ার শোরুমগুলোতে ব্যবসা শুরু করেন শাহিন আলম। একটি শোরুম ভাড়ায় চলে। আরেকটি শোরুমে নিজে ব্যবসা করেন।

আগে নিজেই শোরুমে বসলেও এখন তাঁর ভাতিজা বসেন। কারণ, চার বছর ধরে জটিল কিডনি রোগে ভুগছেন শাহিন আলম। প্রতি সপ্তাহে তিন দিন সাভারের গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডায়ালাইসিসের জন্য যেতে হয় তাকে। সাড়ে তিন বছর ধরে এভাবেই চলছে। তাঁর অসুস্থতার খবর খুব বেশি লোকের জানা নেই। শাহিন আলম বললেন, ‘অভিনয় ছাড়ার পর প্রথম দুই বছর অনেকে যোগাযোগ করত। যখন সবাই জেনে গেল, অভিনয় ছেড়ে দিয়েছি, তখন আর তেমন কেউ যোগাযোগ করে না।’

শাহিন আলম জানান, সিনেমার লোকদের মধ্যে অমিত হাসান ও মিশা সওদাগর নিয়মিত তাঁর খোঁজখবর নেন। অনেক দিন আগে শিল্পী সমিতির কয়েকজন তাঁকে দেখতে এসেছিলেন। কেউ কেউ তাঁকে বলেছেন, চিকিৎসার সহযোগিতার জন্য শিল্পী সমিতির সঙ্গে যোগাযোগ করতে। কিন্তু শাহিন আলম তা করেননি। সরকারের কাছ থেকে চিকিৎসা সহায়তা নেওয়ার জন্যও তদবির করেননি। অথচ তিনি গুরুতর অসুস্থ।

শাহিন আলম বললেন, ‘আমার মনে হয়েছে, যারা দুস্থ, আমার চেয়েও যাদের বেশি প্রয়োজন, তারা যাক। এত দিন আল্লাহ একভাবে চালিয়ে নিয়েছেন। সহায়তার কথা ভাবিনি। কিন্তু করোনায় ব্যবসার অবস্থা খারাপ। এখন চাইছি সরকার আমাদের দিকে তাকাক।’ তিনি জানালেন, ছোট বোন তাঁকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। করোনার সময়ও তাঁকে পাশে পেয়েছেন। গুলশানের নিকেতনে নিজের ফ্ল্যাটে থাকেন শাহিন আলম। স্ত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া একমাত্র ছেলেকে নিয়ে তাঁর সংসার।

শাহিন আলম বলেন, দেড় শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। অর্থনৈতিকভাবেও পায়ের নিচে শক্ত জমি তৈরি করেছেন। অসুস্থ হওয়ার আগে পর্যন্ত তাঁর কোনো অসুবিধা ছিল না। ১৯৯১ সালে তাঁর অভিনীত ‘মায়ের কান্না’ ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর একসঙ্গে ৭টি ছবিতে সাইন করেন। তখন থেকে পেছনে না তাকিয়ে একটানা কাজ করে গেছেন। এই কাজ তাঁর ভিত গড়ে দিয়েছে।

শাহিন আলম জানালেন, তিনি দূরে থাকলেও সিনেমার খবর কিছুটা রাখেন। এখন কাজ কম হচ্ছে, অভিনয়শিল্পীদের হাতে কাজ নেই, এসব খবর তাঁর কানে আসে। ‘মাসুদ রানা’কে নিয়ে একাধিক ছবি হচ্ছে, সে খবরও তাঁর অজানা নেই। এখন তাঁর চাওয়া কেবল সুস্থতা। যতদিন আয়ু আছে, সুস্থভাবে বাঁচতে চান একসময়ের ব্যস্ত ঢালিউড নায়ক শা


সর্বশেষ সংবাদ