হোস্টেলে ৩ মাসের ভাড়া বাকি, ১৩ ছাত্রীকে অবরুদ্ধ করে আদায়ের চেষ্টা

  © সংগৃহীত

তিন মাসের ভাড়া বাকি থাকায় বগুড়া শহরের কামারগাড়ি এলাকায় মুন্নুজান ছাত্রী নিবাসে ১৩ ছাত্রীকে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় কর্তৃপক্ষ এবং ছাত্রীদের মাঝে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। আজ সোমবার (১ জুন) দুপুরে এ অভিযোগের বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশ ও গণমাধ্যমকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলার পর তারা নিজ নিজ বাড়ি ফিরে যান।

জানা গেছে, মুন্নুজান ছাত্রী নিবাসে সরকারি আজিজুল হক কলেজসহ আশপাশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রী এবং কর্মজীবী মিলে তিন শতাধিক নারী থাকেন। করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার পর ছাত্রী নিবাসের শিক্ষার্থীরা ২০ মার্চের মধ্যেই নিজ নিজ বাড়িতে চলে যায়। এরপর কিছু শিক্ষার্থী ঈদের পর ছাত্রী নিবাসে ফেরে। এরপর তারা তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এবং কাপড়চোপড় নিয়ে বাড়ি যেতে চান।

কিন্তু ছাত্রী নিবাসের কর্তৃপক্ষ তাদের এপ্রিল, মে এবং জুন মাসের ভাড়া পরিশোধ করে যেতে বলেন। এ নিয়ে গত ৩১ মে থেকে ছাত্রীদের সাথে ছাত্রী নিবাসের সুপার হাফিজা খাতুনের সাথে তর্কবিতর্ক চলছিল। ভাড়া না দিলে তারা তাদের মালামাল নিয়ে বাড়ি যেতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন। এর এক পর্যায়ে সোমবার ১৩ ছাত্রী তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে হোস্টেল ত্যাগ করতে চাইলে সুপার হাফিজা খাতুন তাদের আটকিয়ে দেন। পরে মালিক আবদুল্লাহেল কাফীর সঙ্গে কথা বললে তিনি দুই মাসের ভাড়া নিয়ে ছাত্রীদের ছেড়ে দিতে বলেন। এ অভিযোগের বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশ ও গণমাধ্যমকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলার পর তারা নিজ নিজ বাড়ি ফিরে যান।

আজিজুল হক কলেজের ছাত্রী মোছা. রুমা বলেন, আজ আমার রুমে গিয়ে দেখি, সব জিনিসপত্র তছনছ করা। জামা কাপড়সহ মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি হয়ে গেছে। আশপাশের অন্য ছাত্রীদের রুমেরও একই অবস্থা। এই পরিস্থিতিতে আমরা বাড়ি যেতে চাইলে হোস্টেল সুপার তিন মাসের ভাড়া পরিশোধ করে যেতে বলেন।

এইচএসসি পরীক্ষার্থী দ্বীপান্বিতা বলেন, করোনা সংক্রমণ শুরু হলে আমি বাড়ি চলে যাই। আজ বইপত্র নিতে আসি। কিন্তু তিন মাসের ভাড়া না দিলে আমাকে বের হতে দেওয়া হবে না বলে জানান হোস্টেল সুপার।

মুন্নুজান ছাত্রী নিবাসের সুপার হাফিজা খাতুন বলেন, এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত ভাড়া আমরা প্রথমে ছাত্রীদের কাছ থেকে চেয়েছিলাম। ছাত্রীরা দিতে অপরগ হলে আমি হোস্টেলের মালিকের সাথে কথা বলি। তিনি ছাত্রীদের কাছ থেকে শুধুমাত্র এপ্রিল মাসের ভাড়া নিতে বলেন। কিন্তু ছাত্রী তিন মাসের জায়গায় একমাসের ভাড়া দিতেও অস্বীকার করছিল।

স্টেডিয়াম ফাঁড়ির পুলিশের এসআই জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ছাত্রী নিবাস মালিকের সঙ্গে কথা বলেছি। ছাত্রীদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে ছাত্রীনিবাস ত্যাগ করতে বলা হয়েছে। যার টাকা আছে, সে দিয়ে যাবে। আর যার নাই, সে পরে এসে দেবে। তবে টাকার জন্য কোনো ছাত্রীকে আটকে রাখতে পারবে না। কর্তৃপক্ষ যদি তাতে বাধা দেয়, তবে ওই ছাত্রী নিবাস কর্তপক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ