করোনা: কিউবায় প্রত্যেকের বাড়ি যাচ্ছেন মেডিকেল শিক্ষার্থীরা

  © সংগৃহীত

করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরুর পর প্রত্যেকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নিচ্ছেন কিউবার চিকিৎসাবিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে এমন পদক্ষেপ নিয়েছেন তাঁরা।বাড়ি গিয়ে সদস্যা সংখ্যা, বিদেশিদের সংস্পর্শে এসেছেন কিনা কিংবা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন কিনা, সেসব বিষয়ে প্রশ্ন করছেন তারা। খবর: এএফপি।

কিউবায় প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষার্থী এমন প্রশ্ন করে চলেছেন। কিউবায় অনেকেই মাস্ক পরেন। অনেক দোকানে মাস্ক না পরলে ক্রেতাদের ঢুকতে দেওয়া হয় না। এরমধ্যে সাদা গাউনের চিকিৎসাবিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের আলাদা করা যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের ছয় দশকের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রয়েছে কিউবায়। পর্যটনশিল্পের ওপর নির্ভরশীল দেশটি করোনা ঠেকাতে তাদের সীমান্ত বন্ধ করেছে। কিউবায় এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২১২ জন। মৃত্যু হয়েছে ছয়জনের। প্রায় দুই হাজার ৮০০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে।

কিউবার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার বেশ সুনাম রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, দেশটিতে প্রতি ১০ হাজার মানুষের জন্য চিকিৎসক রয়েছেন ৮২ জন। অথচ রাশিয়ায় ৪০, যুক্তরাষ্ট্রে ২৬ ও চীনে ১৮ জন করে চিকিৎসক রয়েছেন।

সেখানকার চিকিৎসক কেব্যালেরো গঞ্জালেজ বলেন, ‘ধনী দেশের মতো আমাদের প্রযুক্তি নেই। তবে আমাদের নিঃস্বার্থ, মানবিক ও যোগ্য মানুষ রয়েছে।’

অবশ্য এভাবে বাড়ির দোরগোড়ায় সেবা দেওয়া কিউবায় নতুন নয়। যেকোনো সংক্রমক রোগের সময় কিউবার পারিবারিক চিকিৎসকরা এমন কাজ করেন। তবে করোনার প্রকোপ শুরুর পর চিকিৎসকদের তৎপরতা বেড়ে গেছে।

কিউবার ২৫টি চিকিৎসা অনুষদ স্বনামধন্য লাতিন আমেরিকান স্কুল অব মেডিসিন কয়েক হাজার বিদেশিকে আকৃষ্ট করে। দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সুসানা দিয়াজ বলেন, ‘আমরা দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি। ডেঙ্গুর সংক্রমণ রোধে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেবা দিই। করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেবা দিতে বলেছে আমাদের।’

স্থানীয় এক বাসিন্দা মাইতি পেরেজ বলেন, ‘কিউবায় সবাই চিকিৎসকদের ভালোবাসে। আমি খুব খুশি। তাঁরা আমাদের স্বাস্থ্যের খোঁজখবর রাখছে।’

দরজার সামনে দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীদের আসা-যাওয়া দেখেন কার্লোস লাগোস। এ ব্যাপারটি তাঁর কাছে নতুন। শিক্ষার্থীরা জানতে চান, জ্বর এলে কিংবা শরীর খারাপ লাগলে কে যত্ন নেবে। দেশটিতে বয়স্ক ব্যক্তিদের সেবাদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ২০ ভাগ মানুষের বয়স ৬০ বছরের বেশি।

নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য দেশটির অধিবাসীরা বাইরে যাচ্ছে। হাত পরিষ্কারের জন্য ক্লোরিনের মিশ্রণ ব্যবহার করছে। সেখানে সাবান ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার অপ্রতুল। আর মেডিকেল ফেস মাস্ক না থাকায় নিজেই কাপড় দিয়ে মাস্ক বানিয়ে পরছেন অনেকে।


সর্বশেষ সংবাদ