উহানে তথ্য গোপন চীনের! প্রকৃত মৃত্যুর নতুন সংখ্যা

  © সংগৃহীত

চীনের উহান থেকে উৎপত্তি এই ভাইরাস এখন ইউরোপের স্পেন ও ইতালিকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ইতালিতে সাড়ে ১০ হাজার এবং স্পেনে সাড়ে ৬ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এরই মধ্যে চীনে করোনায় মৃত বা আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। স্থানীয়দের বিশ্বাস, করোনায় শুধুমাত্র উহান শহরেই ৪২ হাজার মানুষের প্রানহানি হয়েছে। তবে সরকারি হিসেব বলছে, উহানে করোনায় মারা গেছে ৩ হাজার ৩শ মানুষ আর আক্রান্ত হয়েছে ৮১ হাজারের বেশি মানুষ।

স্থানীয়দের দাবি, ২৪ ঘন্টায় ৩ হাজার ৫শ মানুষের সৎকার করা হয়েছে ওই শহরে। এ থেকেই বোঝা যায় ১২ দিনে ৪২ হাজার মানুষের মরদেহ পোড়ানো হয়েছে। বাসিন্দাদের দাবি, এপ্রিলের ৫ তারিখ স্থানীয় কিং মিং উৎসবের আগেই মরদেহ পোড়ানো ছাই অর্থাৎ অস্থি খুঁজে পাওয়া যাবে।

এদিকে হুবেই প্রদেশে যাদের করোনা ধরা পড়েনি তারা দীর্ঘ ২ মাস পর চলতি মাসের ২৫ তারিখ মধ্যরাত থেকে প্রদেশের বাইরে যাওয়ার অনুমতি পেয়েছে। তবে উহান শহরে যাতায়াতের ব্যাপারে এপ্রিলের ৮ তারিখ পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের খবরে বলা হয়, উহানের বাসিন্দাদের দাবি, শহরের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সাতটি স্থান থেকে আলাদা করে প্রতিদিন ৫শ করে শবাধার তাদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তার মানে ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ৫শ মানুষের সৎকার করা হয়েছে ওই শহরে। হানকাউ, উচাং ও হানিয়াং এলাকার শোকগ্রস্ত পরিবারগুলোকে জানানো হয়েছে, এপ্রিলের ৫ তারিখ স্থানীয় কিং মিং উৎসবের আগেই মরদেহ পোড়ানো ছাই অর্থাৎ অস্থি তাদেরকে দেওয়া হবে। এই উৎসবে লোকেরা তাদের পূর্বপুরুষের আত্মার শান্তি কামনা করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উহানের এক বাসিন্দা রেডিও ফ্রি এশিয়াকে বলেছিলেন, ‘এত কম মানুষ মারা গেছে এটা হতে পারে না। কারণ সৎকারকারীরা রাত দিন ২৪ ঘণ্টা কাজ করেছেন।’

মাও (ছদ্মনাম) নামে আরেক বাসিন্দা বলেছেন, ‘ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত, কর্তৃপক্ষ হয়তো ধীরে ধীরে মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশ করবে। যাতে মানুষের বাস্তবতাটা মেনে নিতে সহজ হয়।’

হুবেই প্রদেশের সরকার ঘনিষ্ঠ এক সূত্র জানিয়েছে, সঠিক রোগ নির্ণয় ছাড়াই অনেক মানুষ তাদের বাড়িতেই মারা গেছেন।

স্থানীয়দের দাবি, মৃতের সংখ্যা নিয়ে তাদের অনুমান অতিরঞ্জিত নয়। কারণ এক মাসেই কমপক্ষে ২৮ হাজার মৃতদেহ সৎকার করা হয়েছে।

এইসব তথ্য এমন সময় সামনে এলো যখন বলা হচ্ছে করোনাভাইরাসে যুক্তরাষ্ট্র ও ইতালিতে সর্বোচ্চ সংক্রমণ হয়েছে এবং সারা বিশ্বে এই ভাইরাসে মারা গেছেন ৩৩ হাজার মানুষ, সংক্রমিত হয়েছে ৭ লাখ ২২ হাজার মানুষ। এর মধ্যে শুধু ইতালিতেই মারা গেছেন ১০ হাজার ৭৭৯ জন, আক্রান্ত হয়েছেন ৯৭ হাজার ৬৮৯ জন। আর করোনাভাইরাসের এপিসেন্টারে পরিণত হওয়া যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৪৮৪ জনের এবং সংক্রমিত হয়েছেন ১ লাখ ৪২ হাজার ৭০ জন।


সর্বশেষ সংবাদ