২৬ মার্চ ২০২০, ১৯:৩৯

করোনা: বাড়ি ফিরতে ছেলেকে কাঁধে নিয়ে ২ দিন হাঁটলেন বাবা!

  © এনডিটিভি

করোনাভাইরাসে থমকে গেছে গোটা ভারত। গত মঙ্গলবার রাতেই গোটা দেশে লকডাউনের ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। করোনা সংক্রমণের বাড়ন্ত রুখতেই তাঁর ওই ঘোষণা। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন জায়গায় আটকে পড়েছেন বহু মানুষ।

অনেকেই নিজের রাজ্য থেকে বাইরে বেরিয়ে অন্য রাজ্যে গেছিলেন কাজের খোঁজে, লকডাউনে সেখানেই আটকে পড়েছেন তাঁরা। এদিকে হাতে টাকা-পয়সা ফুরিয়ে আসাতে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ঘরের বাইরে কীভাবে কাটাবেন একথা ভেবে কুলকিনারা পাচ্ছেন না অনেকেই। ঠিক এমনই পরিস্থিতি বান্টি নামের এক দিনমজুরের।

উত্তরপ্রদেশের গ্রাম থেকে দিল্লিতে কাজের জন্যে আসা ওই যুবক একরকম নিরুপায় হয়েই পরিবার সমেত পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরলেন। ২১ দিনের এই লকডাউন পর্বে কীভাবে দিল্লিতে দিন গুজরান হবে তাঁদের, কোনও বিকল্প না দেখে, বান্টি কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন ১০ মাসের ছেলেকে।

স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে সেখান থেকে প্রায় ১৫০ কিমি দূরে নিজের গ্রামের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন তিনি।টানা দু’দিন হাঁটার পর পৌঁছন নিজের গ্রামে। বান্টির মতো একই অবস্থা আরও অনেকেরই।

‘আমরা এখানে কী খাব? কেউ তো আর পাথর খেতে পারে না’, বাস্তবিক এই প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন বান্টির স্ত্রীও। তাঁদের অভিযোগ, দিল্লিতে তাঁদের কেউ কোনও সাহায্য করেনি লকডাউন পরিস্থিতিতে। তাই নিরুপায় হয়েই হেঁটে গ্রামে ফেরার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে তাঁদের।

এদিকে লকডাউন পরিস্থিতিতে যাঁরা ঘরের বাইরে বেরোতে পারছেন না তাঁদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন গেরুয়া দলের কর্মীরা। ২১ দিনের লকডাউনের মধ্যে বিজেপি তাদের এক কোটি কর্মীদের প্রত্যেককে নির্দেশ দিয়েছে যাতে অন্তত পাঁচ জন করে মানুষের খাওয়ার ব্যবস্থা করতে সক্রিয় হন তাঁরা।

বুধবার এক দলীয় বৈঠকে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা বলেন, দল আশা করছে এভাবে অন্তত লকডাউনের ফলে বিপদে পড়া পাঁচ কোটি মানুষকে খাওয়ার বিষয়ে সহায়তা করতে পারবেন তাঁরা।

‘ভারতকে বাঁচাতে, তার প্রতিটি নাগরিককে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন আপনি, আপনার পরিবার ... দেশের প্রতিটি রাস্তা, প্রতিটি জায়গাকে লকডাউন করে দেওয়া হচ্ছে’,মঙ্গলবার ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

তিনি বলেন, ‘আগামী ২১ দিনের মধ্যে বাড়ির চৌকাঠ পেরোনোর কথা ভুলে যান ... কারণ আপনি এই লক্ষ্মণ রেখা পার হলে ভাইরাসটিকে বাড়িতে আমন্ত্রণ করে নিয়ে আসবেন।’

করোনাভাইরাস এমনই ভয়ঙ্কর যে দেশের মানুষ একটা মাত্র ভুল পদক্ষেপ ফেললে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়বে এই ভাইরাস, একথাও বলেন নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, ‘কিছু মানুষ মনে করছেন এই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টি শুধুমাত্র রোগীদের জন্যে। এটা একবারেই ঠিক নয়। এই ভাইরাস থেকে লড়াইয়ের একমাত্র উপায় সামাজিক দূরত্ব। এই নিয়ম মানতে হবে দেশের প্রতিটি নাগরিক, প্রতিটি পরিবার, প্রতিটি সদস্যকে, এমনকী দেশের প্রধানমন্ত্রীকেও।’ খবর: এনডিটিভি।