অচল হাত-পায়ে পিএইচডি, এখন লাখো মানুষের আদর্শ

  © সংগৃহীত

হাত নেই, বোমা বিস্ফোরণের কারণে অনুভূতিহীন পা-ও। তবুও জীবন যুদ্ধে হেরে যা্ননি তিনি। শিক্ষাজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে হয়েছেন সফল। সফলতার গল্পে এখন অনুপ্রাণিত করছেন অন্যদের। কাজ করছেন মানুষের দিনবদলের জন্য। তাই লড়াকু এই নারী আজ হয়ে উঠেছেন সাহসিকতার জীবন্ত উদাহারণ, লাখো মানুষের আদর্শ।

এটি ভারতের তামিলনাড়ুর কুম্বাকোনাম এলাকার মালবিকা আইয়ারের গল্প। মাত্র ১৩ বছর বয়সেই বোমা বিষ্ফোরনে গুরুতর আহত হন তিনি। হাত-পায়ে ভয়াবহ জখম নিয়ে যখন তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়, প্রাণ বাঁচাতে প্রথমেই দু’হাত কেটে ফেলতে হয়। তবে, কাজ দ্রুত করতে গিয়েই বাঁধে গড়বড়। সেলাই করার সময় হাতের হাড় মাংসে ঢাকা না পড়ে বেরিয়ে রয়েছে, তা খেয়াল করেননি কেউই। সেই থেকে কী যে যন্ত্রণা মালবিকার! একটু আঘাত লাগলেই ব্যথায় কুঁকড়ে উঠতেন। কিন্তু ততোদিনে তা বাস্তবতা। বাধ্য হয়েই বাস্তবতা মেনে নেন মালবিকা। সেই মেনে নেয়া থেকে এখন ৩০ বছর বয়সে বিশ্বজুড়ে পরিচিত এক মুখ মালবিকা।

১৮ ফেব্রুয়ারি নিজের জন্মের দিনটিকেই তিনি বেছে নেন নিজের জীবনের গল্প বলার জন্য। নিজের ভেরিফাইড টুইটার অ্যাকাউন্টে মালবিকা বলেন, বোমায় যখন হাত উড়ে গেল, ডাক্তারদের একটাই চিন্তা, কীভাবে আমাকে বাঁচাবেন! তাই তারা দ্রুত আমার দুটো হাতই কেটে ফেলেন। তবে সেলাই করার সময় হাতের হাড় যে বেরিয়ে আছে, তা খেয়াল করেননি। ভুল জায়গায় সেলাই হওয়ায় হাতের হাড় বেরিয়ে ছিল।

চিকিৎসকদের সেই ভুলের মাশুল মালবিকাকে সারাজীবন দিতে হবে। হাত ঠিক হওয়ার আর কোনো সম্ভাবনা না থাকায় নিতে হয়েছে বিকল্প পদ্ধতি। যন্ত্রণা ও দুর্ঘটনা থেকে বাঁচতে বের হয়ে থাকা হাড়কে রূপার পাতলা পাত দিয়ে মুড়ে দেয়া হয়। ধীরে ধীরে সেটিই হয়ে ওঠে মালবিকার হাতের আঙুল। এখন এটি দিয়েই তিনি ফোন চালান, টাইপ করেন।

এই ‘রূপালি আঙুল’ নিয়েই তিনি শেষ করেছেন পিএইচডি’র থিসিস। বক্তব্য রেখেছেন জাতিসংঘে, হয়ে উঠেছেন ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের দৃষ্টিতে বিশ্ব পরিবর্তনের অগ্রণী নারী। তাই তো সবার উদ্দেশে মালবিকার অভয়বাণী, যতই দুঃখ আসুক, কষ্ট আসুক, হার মানবেন না। জীবনের ছোট ছোট ঘটনাগুলো উপভোগ করুন।


সর্বশেষ সংবাদ