ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন

বিয়ে করে আসর থেকেই আন্দোলনে বর-কনে

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে মানববন্ধন
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে মানববন্ধন  © সংগৃহীত

ভারতে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) প্রতিবাদে ৬২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এক মানববন্ধন হয়েছে। সিএএ বাতিলের এ আন্দোলনে অনেকের মধ্যে বেশ কিছু নবদম্পতিকে অংশ নিতে দেখা গেছে। যারা বিয়ের আসর থেকেই আন্দোলনে যোগ হয়েছেন।

গতকাল রবিবার (২৬ জানুয়ারি) দেশটির প্রজাতন্ত্র দিবসে প্রায় ৭০ লাখ মানুষ এই মানববন্ধনে অংশ নেয়। রাজ্যের প্রাণকেন্দ্র পালায়েমে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নও এ মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রজাতন্ত্র দিবসে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে কেরালার উত্তরে কাছারগদ শহর থেকে তিরুবনন্তপুরম পর্যন্ত ৬২০ কিলোমিটার দীর্ঘ মানববন্ধন অংশ নিয়েছে জনগণ। মানববন্ধনের আয়োজন করে কেরালার ক্ষমতাসীন দল লেফট ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এলডিএফ)। কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নসহ লাখো মানুষ রাজ্যজুড়ে সড়কের পাশে মানববন্ধন শামিল হন।

পিনারাই বিজয়ন বলেন, ‘যাঁরা এই মানববন্ধনে অংশ নিয়েছেন, তাঁদের সবাইকে আমি শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। থেমে থাকা বা নীরব থাকার সময় এটি নয়। আমাদের সংবিধান পরিবর্তনের সব চেষ্টা প্রতিহত করতে প্রতিবাদ অব্যাহত রাখতে হবে।’

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া উল্লাস নামের এক তরুণ বলেন, ‘সংবিধানের জন্য ও সংবিধান সুরক্ষার জন্য আমি এখানে এসেছি। কেউ যদি সংবিধান পরিবর্তনের চেষ্টা করে, আমরা কঠোর হাতে তা প্রতিহত করব।’

অভিনেত্রী সংগীতা মোহন বলেন, ‘জাত, ধর্মবিশ্বাস বা ধর্মের ভিত্তিতে যাদের অবজ্ঞা করা হচ্ছে, আমি বিশ্বাস করি, তাদের পাশে দাঁড়ানো আমরা দায়িত্ব। এই আমাদের ভারত এবং আমি সবার সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

হিজাব পরা এক মুসলিম নারী বলেন, ‘আমরা এখানে রাজনীতির জন্য আসিনি। কোনো দলের কথা বলতে আসেনি। ভারতেই আমরা বাঁচব এবং মরব।’

প্রসঙ্গত, গত ৩১ ডিসেম্বর বিতর্কিত সিএএ বাতিলের প্রস্তাব পাস হয়েছে কেরালা বিধানসভায়। আইনটি বাতিলের দাবিতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদনও জানিয়েছে কেরালা। কংগ্রেসশাসিত পাঞ্জাব ও রাজস্থান রাজ্যই একই প্রস্তাব পাস হয়েছে।

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ), জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) ও জাতীয় জনসংখ্যা নিবন্ধন (এনপিআর) নিয়ে এখন উত্তপ্ত ভারতের রাজনীতি। রাজ্যে রাজ্যে চলছে এসব আইন বাতিলের আন্দোলন। দাবি উঠেছে, ধর্মনিরপেক্ষ ভারতে এসব আইনের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক বিভাজন মানবে না দেশবাসী। এই আইনগুলো বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।


সর্বশেষ সংবাদ