করোনাভাইরাসে মাস্ক সংকট পড়েছে চীন

  © সংগৃহীত

করোনাভাইরাসের এখনও কোনও প্রতিষেধক বা ওষুধ আবিষ্কৃত হয়নি। এখন প্রতিরোধই এ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়। তবে সেদিক থেকেও নতুন বিপদ দেখা দিয়েছে চীনে। ভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় মানুষজন ব্যাপক হারে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার কেনার কারণে এসব জিনিসের সংকট দেখা দিয়েছে।

চীনে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ২৮৭ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে ৪১ জন মারা গেছেন। প্রতিদিনই এই সংখ্যা বাড়ছে। এ কারণে হুট করেই চাহিদা বেড়ে গেছে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হ্যান্ডওয়াশ, থার্মোমিটারের মতো চিকিৎসা সামগ্রীর। এরই মধ্যে দেশটিতে তাওবাও-জেডি ডটকমের মতো পণ্যকেনার অনলাইন সাইটগুলোতেও স্টক শেষ হয়ে গেছে মাস্ক-হ্যান্ড স্যানিটাইজারের।

দ্য ফিনান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে মাত্র দুইদিনে প্রায় আট কোটি মাস্ক বিক্রি করেছে আলিবাবার মালিকানাধীন তাওবাও। জানুয়ারির ১৯ থেকে ২২ তারিখের মধ্যে জেডি ডটকম মাস্ক বিক্রি করেছে অন্তত ১২ কোটি ৬০ লাখ পিস। এছাড়া তাদের হ্যান্ড স্যানিটাইজারের স্টকও শেষ হয়ে গেছে। বিক্রি বেড়েছে থার্মোমিটার, চশমাসহ ঠান্ডাজনিত রোগের বিভিন্ন ওষুধেরও।

এই সংকট মোকাবিলায় বেশিরভাগ মাস্ক কারখানাগুলো চীনা নববর্ষ উপলক্ষে ছুটিতে থাকা কর্মীদের ডেকে পাঠিয়েছে। অনেক কারখানায় উৎপাদন বাড়াতে দিনরাত কাজ চলছে। তাওবাও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্রেতাদের জানিয়েছে, এই সংকট সাময়িক। দেশজুড়ে শিগগিরই তাদের স্টক আবার পূরণ করা হচ্ছে। এ নিয়ে ক্রেতাদের উদ্বিগ্ন না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

এমন পরিস্থিতিতে মাস্কের মতো প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর দাম বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই।
যদিও জেডি ডটকম ক্রেতাদের আশ্বস্ত করেছে, এমন দুর্যোগের মুহূর্তে তারা কিছুতেই পণ্যের দাম বাড়াবে না। তবে স্টকই যদি না থাকে, সেক্ষেত্রে সীমিত দাম কতটুকু উপকার করবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে অনেকের।

শুধু চীনই নয়, প্রতিবেশী দেশ জাপান-থাইল্যান্ডেও চিকিসা সামগ্রীর স্টকের অবস্থাও অনেকটা একই। দ্য স্ট্রেইট টাইমস জানিয়েছে, একজন সর্বোচ্চ ১০টি মাস্ক কিনতে পারবে বলে সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে ম্যাকাও।

আবার অনেক দেশই করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাড়তে থাকায় নিজেদের মজুদ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। নিজ দেশের নাগরিকদের সুরক্ষায় তাইওয়ান আগামী একমাসের জন্য মাস্ক রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে। তবে এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের পদ্ধতি কিছুটা ভিন্ন। দেশটির কর্মকর্তারা বলছেন, করোনাভাইরাস আক্রান্ত মানুষদের থেকে দূরে থাকাই মাস্কের চেয়ে ভালো বিকল্প হতে পারে। এজন্য উহানের লোকজন থেকে মার্কিন নাগরিকদের দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এশিয়ায় করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে ধারণার চেয়েও অনেক বেশি ভয়ংকরভাবে। আক্রান্ত ব্যক্তির সামান্য হাঁচি, কাশি, কফের মাধ্যমে সহজেই ছড়িয়ে পড়ছে এই ভাইরাস।


সর্বশেষ সংবাদ