রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষার দায়িত্ব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এড়াতে পারে না

  © সংগৃহীত

কক্সবাজারের আশ্রয় শিবিরগুলোতে রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা নিশ্চিত করার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নিজেদের দায়িত্ব এড়াতে পারে না। প্রথম আন্তর্জাতিক শরণার্থী ফোরাম শুরুর আগে শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ অভিমত ব্যক্ত করেছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়া ক্যাম্পেইনার সাদ হাম্মাদি গতকাল এক বিবৃতিতে আরও বলেন, দুই বছরেরও বেশি সময় আগে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেয়া ৫ লাখের বেশি শিশু এখন পর্যন্ত শ্রেণিকক্ষে যেতে পারেনি। জাতিসঙ্ঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার আয়োজনে জেনেভাতে ১৬-১৮ ডিসেম্বর প্রথম আন্তর্জাতিক শরণার্থী ফোরাম অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে; যেখানে শিক্ষাকে মূল ছয়টি প্রতিপাদ্যের একটি হিসাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। কেননা, কক্সবাজারের শিবিরগুলোতে থাকা রোহিঙ্গা শিশুদেরকে একটি হারিয়ে যাওয়া প্রজন্মে পরিণত হতে দেয়া যায় না।

১৬-১৮ ডিসেম্বর জেনেভায় জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার আয়োজনে প্রথম আন্তর্জাতিক শরণার্থী ফোরাম অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে শিক্ষাকে মূল ছয়টি প্রতিপাদ্যের একটি হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে।


২০১৯ সালের অক্টোবরে ইন্টার সেক্টর কো–অর্ডিনেশন গ্রুপ-এর প্রকাশিত বহু খাতভিত্তিক প্রয়োজন মূল্যায়ন (এমএসএনএ) প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, কক্সবাজারে জরিপ করা ১ হাজার ৩১১টি পরিবারের মধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ পরিবারে অন্তত একটি শিশু পাওয়া গেছে, যাদের বয়স হওয়া সত্ত্বেও স্কুলে যাচ্ছে না।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়া ক্যাম্পেইনার সাদ হাম্মাদি বলেছেন, কক্সবাজারের শিবিরগুলোতে থাকা রোহিঙ্গা শিশুদের একটি হারিয়ে যাওয়া প্রজন্মে পরিণত হতে দেওয়া যায় না। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এটা মেনে নিতে হবে যে এই শিশুরা শিগগিরই মিয়ানমারে তাদের বাড়িঘরে ফিরে যেতে পারবে না। শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে তারা নিজেদের ভবিষ্যৎকে ক্রমেই হারিয়ে যেতে দেখবে, এমনটা হতে পারে না। তিনি আরও বলেন, যখন একটি শিশু শিক্ষিত হয় তখন সবাই উপকৃত হয়। বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দুই পক্ষকেই কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশুদের শিক্ষা নিশ্চিত করতে অবশ্যই জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে। শরণার্থীদের শিক্ষা গ্রহণের ওপর যেসব বিধিনিষেধ রয়েছে তা উঠিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার এ ক্ষেত্রে নিজেদের পদক্ষেপ শুরু করতে পারে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অক্টোবর পর্যন্ত কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং স্থানীয় শিশুদের শিক্ষার জন্য গৃহীত ‘২০১৯ জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান’–এর ৫০৮ কোটি টাকার মধ্যে ৪০ শতাংশ পেয়েছে বাংলাদেশ সরকার। মানবিক সহায়তা সংস্থাগুলোর কর্তাব্যক্তিরা আশঙ্কা করছেন, শিক্ষার জন্য এই অনুদান ২০২০ সালে আরও কমতে পারে।

 


সর্বশেষ সংবাদ