শেষদিনের শুনানিতে মামলা খারিজের আহ্বান সু চি’র

  © সংগৃহীত

রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার করা মামলার শুনানি ও যুক্তিতর্ক শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) নেদারল্যান্ডসের হেগে আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে শুনানির শেষ দিন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে গাম্বিয়া ও মিয়ানমার। শুনানির শেষ পর্যায়ে নিজেদের পক্ষে বক্তব্য তুলে ধরার নামে আবারও সাফাই গান মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি। বলেন, রোহিঙ্গাদের গোষ্ঠীগতভাবে ধ্বংস করার চেষ্টা করা হয়নি। যত শিগগিরই সম্ভব আদালত তার সিদ্ধান্ত উভয় পক্ষকে জানিয়ে দেবে বলে জানান আদালতের প্রেসিডেন্ট ইউসুফ। শেষ দিনের শুনানিতে মামলা খারিজ করে দেয়ার আহ্বান জানান মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি। অন্যদিকে আদালতের কাছে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা নেয়ার আবেদন জানিয়েছে গাম্বিয়া।

 

ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো মিয়ানমারেও সামরিক অপরাধের বিচার সামরিক বিচার ব্যবস্থায় হয়ে থাকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঐ বিচারকে বাধাগ্রস্ত করা ঠিক হবে না।

অং সান সু চি বলেন, জাতিগত সংঘাত আবার শুরু হোক এমন কিছু আমরা চাই না। গাম্বিয়ার মামলাটি খারিজ করে দেওয়া হোক। এবং অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার গাম্বিয়া যে আবেদন জানিয়েছে সেটিও খারিজ করে দেয়া হোক। সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা কাজ করছি আমরা এবং সেটা অব্যাহত রাখতে চাই। আদালতের কাছে আমরা সেই সুযোগ চাই।

এর আগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে রোহিঙ্গাদের জাতিগত নিধনের তথ্য-প্রমাণ তুলে ধরে গাম্বিয়া। দেশটির আইনজীবী বলেন, অং সান সু চি আগের দিন যে ভাষায় কথা বলেছেন সেটি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।

গাম্বিয়ার আইনজীবী পল রাইখলার বলেন, মিয়ানমার গতকাল যা বলেছে, এসব কথা তারা আগে থেকেই বলে আসছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে যে গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে, তার সপক্ষে শক্ত কোনো যুক্তি তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে দেশটি। সু চি সেই গথবাঁধা কথাই বলে গেছেন। মিয়ানমার যে ভাষায় কথা বলেছে তা কাম্য নয়। তারা রোহিঙ্গাদের বাঙালি আখ্যা দিয়ে নিধনযজ্ঞ চালিয়েছে। ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ঢালাওভাবে অপপ্রচার ছড়িয়েছে। তারা রোহিঙ্গাদের গণহত্যা যেমন অস্বীকার করেছে তেমনি ধর্ষণ নিয়েও একটি শব্দ পর্যন্ত বলেনি। সমস্যার সমাধানে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে জোর দেন তিনি।

গাম্বিয়ার আইনজীবী আরো বলেন, মিয়ানমার বাংলাদেশের সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের চুক্তি করেছে। কিন্তু তারা চুক্তি বাস্তবায়নের নামে প্রতারণা করে যাচ্ছে। তারা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিচ্ছে না। এ নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেই তাদের। তারা চাইলেই রাখাইনের পরিস্থিতির উন্নতি করতে পারে, তাদের সেই সক্ষমতা আছে কিন্তু নেই স্বদিচ্ছা। তাই রাখাইনের দৃশ্যমান কোনো উন্নতিও হচ্ছে না।

দুই পক্ষের শুনানি ও যুক্তিতর্ক শেষে আদালত জানান, যত শিগগির সম্ভব উভয় পক্ষকে আদালত তার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবে। তিনদিনের শুনানি শেষে মামলার রায় পেতে ৮ সপ্তাহ থেকে আরও বেশি সময় লেগে যেতে পারে।


সর্বশেষ সংবাদ