সু চি’র বিচারের দাবিতে কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের বিক্ষোভ

  © সংগৃহীত

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের গণহত্যা মামলায় নেদারল্যান্ডসে আন্তর্জাতিক আদালতে শুনানি শুরু হচ্চে আজ মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) থেকে। এর প্রাক্কালে দেশটির নেত্রী অং সান সুচির বিচারের দাবিতে কক্সবাজারের আশ্রয় শিবিরে বিক্ষোভ করছেন রোহিঙ্গারা।

রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচার দাবি ও মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির আগমন ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠছে নেদারল্যান্ডের হেগ শহর। তার উপস্থিতিতে সেখানে অবস্থিত আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) শুরু হচ্ছে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যা মামলায় শুনানি।

শুনানি শেষে আদালত দেশটির অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করতে পারেন। হেগে শুনানির প্রাক্কালে মিয়ানমারকে সর্বতোভাবে বয়কটের আহবান জানিয়েছেন ৩০টি সংগঠন।

শুনানি উপলক্ষে হেগে টানা তিন দিন বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে রোহিঙ্গা সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা। মিয়ানমার সরকারের সমর্থকরাও সেখানে সমাবেশ করবে। শুনানিতে ওআইসির পক্ষে মামলা দায়ের করা গাম্বিয়ার আইনজীবীরা আদালতে পূর্ণাঙ্গ শুনানির আগেই সাময়িক পদক্ষেপ নেয়ার আবেদন জানিয়েছে।

ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,শুনানি চলাকালে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ এই আদালতের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। জানা গেছে, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার অংশ হিসেবে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হতে পারে। তবে মিয়ানমার সরকারের প্রধান হিসেবে সু চিকে দায়মুক্তি দেয়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

শুনানিতে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আদালতের প্রতি আহবান জানাবে গাম্বিয়া। আদালত সিদ্ধান্ত নেবেন, এ মামলার বিচারের এখতিয়ার তাদের আছে কি-না। তবে প্রাথমিক শুনানিতে রোহিঙ্গাদের কারও বক্তব্য শোনা হবে না।

আইসিজেতে গত মাসে মামলা করে গাম্বিয়া। এতে কূটনৈতিক ও আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে ওআইসি। শুনানি শুরুর আগে গাম্বিয়ার উদ্যোগকে সমর্থন দিয়েছে কানাডা এবং নেদারল্যান্ডস।

সোমবার এক যৌথ বিবৃতিতে দেশ দুটি বলেছে, জবাবদিহি নিশ্চিত এবং দায়মুক্তি রোধ করতে গাম্বিয়াকে সর্বতোভাবে সহায়তা করবে তারা। এতে বলা হয়, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর দায়িত্ব ছিল রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা দেয়া। অথচ তারাই হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে।

তৎপরতার অংশ হিসেবে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত বব রে হেগে পৌঁছেছেন। প্রথম দিনই শুনানি শুরু করবেন গাম্বিয়ার বিচারমন্ত্রী আবুবকর ম্যারি তাম্বাদু। তিনি আইন শাস্ত্রে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়েছেন ব্রিটেন থেকে।

তিনি রুয়ান্ডা গণহত্যা ট্রাইব্যুনালেরও প্রসিকিউটর ছিলেন। কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের দুর্দশা দেখে যাওয়ার পর মামলা করেন তিনি। এ শুনানি সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। বিপুলসংখ্যক মানুষ শুনানি দেখবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগামী বৃহস্পতিবার শুনানি শেষ হলেও রায় অপেক্ষমাণ রাখা হতে পারে।

হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতেও (আইসিসি) রোহিঙ্গা গণহত্যা নিয়ে আরেকটি মামলা চলছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া আর্জেন্টিনার একটি আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে সু চির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।