বাবরি মসজিদ ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের ২৭ বছর আজ

  © সংগৃহীত

বাবরি মসজিদে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের আজ ২৭ বছর। ১৯৯২ সালের এই দিনে ভারতের অযোধ্যার পাঁচশো বছরের পুরনো ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদে ভাঙচুর চালায় কট্টরপন্থি হিন্দুরা। সেসময় দাঙ্গায় প্রাণ হারায় দু’হাজারের বেশি মানুষ। দিনটি ঘিরে শহরটিতে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

গেলো মাসেই, পাঁচশ বছরের পুরনো মসজিদের জায়গায় রাম মন্দির তৈরির পক্ষে রায় দেন ভারতের সর্বোচ্চ আদালত। বলা হয়, জমির মালিকানা প্রমাণ করতে পারেনি মুসলিমরা। তাই, ২ দশমিক ৭৭ একর জমি পাবে হিন্দু সম্প্রদায়।

একইসাথে, মসজিদ নির্মাণের জন্য অযোধ্যাতেই সুন্নি ওয়াকফ্ বোর্ডকে বিকল্প ৫ একর জমি দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারকে। তাই, সবমিলিয়ে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে অযোধ্যায়। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা এড়াতে আগেই নিরাপত্তা জোরদার করেছে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার।

বাবরি মসজিদ ধ্বংসের হোতা যে ‘সঙ্ঘ পরিবার’, ভারতে বর্তমানে ক্ষমতাসীন বিজেপি দল তাদের অন্তর্ভুক্ত। এ দলের বিপুল নেতাকর্মীও সে দিন আরএসএস এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের উগ্রপন্থীদের সাথে শামিল হন বাবরি মসজিদ ধ্বংসে।

ধর্মনিরপেক্ষতার প্রবক্তা ভারতের কংগ্রেস সরকার তখন ক্ষমতায় ছিল; কিন্তু সে সরকার, পুলিশ ও প্রশাসন এই জঘন্য কর্মে কোনো বাধা তো দেয়ইনি, বরং বাবরি মসজিদ যাতে অবাধে ভেঙে ফেলা যায়, সে ব্যাপারে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছিল। ভারতের তখনকার প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাওয়ের ভূমিকা ছিল রহস্যজনক ও প্রশ্নবিদ্ধ। কট্টর হিন্দুরা এই মসজিদ ধ্বংসের তান্ডবকে কেন্দ্র করে মুসলিমবিরোধী দাঙ্গায় লিপ্ত হয়েছিল। অপর দিকে ভারতের সত্যিকার গণতন্ত্রকামী ও অসাম্প্রদায়িক মহলসমেত বিশ্বের বিবেকবান মানুষমাত্রই বাবরি মসজিদ ধ্বংসের তীব্র নিন্দায় হয়েছেন সোচ্চার।

২৭তম বাবরি মসজিদ দিবস এমন সময় এসে উপস্থিত হয়েছে যখন ভারতের কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন এই মসজিদ ধ্বংসের সাথে জড়িত গেরুয়া গোষ্ঠী। তাদের মদদে গত সপ্তাহে আরএসএস, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বাজরং দলসহ হিন্দু জঙ্গিরা আরেক দফা আস্ফালন দেখিয়ে গেল অযোধ্যায় এসে। তারা নির্মাণসামগ্রী নিয়ে উপস্থিত হয় রাম মন্দির নির্মাণের মহড়া দিতে।


সর্বশেষ সংবাদ