তবুও তাদের পণ্য একদিন কিনুন, লোকসান হবে না!

  © সংগৃহীত

একজন বৃদ্ধ কিছূ শাক-সবজি নিয়ে বসে আছেন। দুই ছেলে নিজেদের সংসার নিয়ে থাকেন। বৃদ্ধ বাবাকে খেতে দিতে তাদের বিরাট অনীহা। তবে বাবাও মানুষের কাছে ভিক্ষা করে খাওয়া পছন্দ করেন না। তাই পণ্য বিক্রি করে জীবন যাপন করতে চান তিনি।

রাজধানীর মিরপুর-১২ নম্বর সেকশনের মুসলিম বাজার। বয়স আশি ছুঁইছুঁই। ঠিকমতো নড়তে চড়তেও পারেন না। কথাও বলেন অস্পষ্ট। বাজারের এক কোণে বসে থাকেন অল্প কিছু পণ্য নিয়ে। যদি কেউ কিনে নেন তবে জুটে যাবে এক বেলার খাবার।

আধুনিক যুগের সুপারশপে পণ্য দামাদামি করে কেনার কোনো সুযোগ নেই। অনেকে ঝামেলা এড়াতে এসব সুপারশপে বেশি দামেই পণ্য কিনে থাকেন গিয়ে থাকেন। তবে যারা দাম করে বাজার করতে চান, তারা ছুটে যান কাঁচাবাজারে। সেখানেই পেয়ে যাবেন এমন কিছু মানুষ, যারা ভিক্ষার পরিবর্তে এভাবে পণ্য বেঁচেই খাবার জুটাতে চান।

বাজারে পণ্যের সম্ভার সাজিয়ে রাখা দোকানিদের দিকেই সবার আগ্রহ। ভিড়ের মাঝে এক কোণে অল্প কিছু পণ্য নিয়ে বসে থাকা মানুষগুলোর দিকে তাকানোর সময় নেই। অথচ একটু দৃষ্টি ঘোরালেই দেখবেন, অসহায় বৃদ্ধ মানুষগুলো বসে আছেন ক্রেতার অপেক্ষায়।

অন্তত একদিন কেউ হয়ে যেতে পারেন তাদের সেই কাঙ্খিত ক্রেতা। প্রয়োজন না থাকলেও স্রেফ অপ্রয়োজনে দামাদামি ছাড়াই তাদের থেকে কিনে নিন পণ্য। তাদের কাছ থেকে একটু বেশি মূল্যে পণ্য কিনলেই বা ক্ষতি কি? তারপরও অনেকে অবশ্য দামাদামি করেন। তবুও একদিন কিনুন তাদের পণ্য, লোকসান হবে না।

তারা চায় কেউ তাদের পণ্য কিনুক, যা বিক্রি করে তারা বড়লোক হবেন না। বড় ব্যবসায়ীও হবেন না, শুধুমাত্র একবেলার খাবার জুটবে। রাজধানীর প্রায় সব বাজারেই দু’একজন এমন মানুষের দেখা পাওয়া যায়।

এদের অনেকেই এসেছেন কোনো গ্রাম থেকে। মাথা গোঁজার একখণ্ড জমিতে একটি লেবু গাছ আছে। কারও বাড়িতে হয়তো কলাগাছ আছে। সেটি থেকে ফল তুলে বাজারে বিক্রি করেন।

কেউ আবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারের মতো বড় বাজারে রাতের বেলায় পণ্য নামানোর সময় উপস্থিত হন। কিছু পণ্য ছিটকে যায় এদিক-ওদিক। সেগুলো জড়ো করেন রাত থেকে ভোর। সকালে সেগুলো বাজারে বিক্রি করে কিছু পয়সার ব্যবস্থা হয়।

 


সর্বশেষ সংবাদ