বাবরি মসজিদ রায়ে একমত পাঁচ বিচারপতি

ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের সাংবিধানিক বেঞ্চে দীর্ঘদিন ধরেই চলেছে বহু বিতর্কিত ও আলোচিত অযোধ্যা মামলার শুনানি। শনিবার সকাল সাড়ে দশটায় এই মামলার রায় দেবে সুপ্রিম কোর্ট, এমনটাই খবর। প্রধানমন্ত্রী মোদী ইতিমধ্যে সব পক্ষকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করার আবেদন করেছেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মধ্যস্থতাকারী প্যানেল বিবাদমান পক্ষগুলিকে নিয়ে সহমত গঠনের চেষ্টা করেছে। মধ্যস্থতাকারী প্যানেলের সেই রিপোর্ট গ্রহণ করে এবং মামলার যাবতীয় দিক বিবেচনা করে আজই আসতে চলেছে এই মামলার চূড়ান্ত রায়। এই রায়দানকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই ‘খাকি সমুদ্রে’ পরিণত হয়েছে অযোধ্যা। সম্পূর্ণ উত্তরপ্রদেশ পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ। রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ, হনুমান মন্দির, বাস, গাড়ি, শহরের প্রতিটি কোণে কোণে মোতায়েন করা হয়েছে উর্দিধারী পুলিশ এবং র‍্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স (র‍্যাফ)।

অযোধ্যা রায়ের আগে উত্তরপ্রদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিব রাজেন্দ্র তিওয়ারি ও ডিজিপি ওম প্রকাশ সিংকে নিজের চেম্বারে ডেকে পাঠিয়েছেন দেশের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। এ মামলার গুরুত্ব বিশ্লেষণ করে অযোধ্যা ও উত্তরপ্রদেশের স্পর্শকাতর অঞ্চলগুলির সুরক্ষা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে প্রায় ৪ হাজার আধা-সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এমনকী শনিবার থেকে সোমবার অবধি রাজ্যের সমস্ত স্কুল, কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্ট রায় দিয়ে জানিয়েছিল, অযোধ্যায় বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমি সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, নির্মোহী আখড়া ও রামলালা বিরাজমানের মধ্যে সমান ভাবে ভাগ করতে হবে। এ রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে ১৪টি আবেদনপত্র জমা পড়ে। এরপর তিন সদস্যের মধ্যস্থতাকারী প্যানেল তৈরি করে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। কিন্তু মধ্যস্থতা ব্যর্থ হওয়ায় গত ৬ অগাস্ট থেকে এ মামলার দৈনিক শুনানি শুরু হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট গঠিত বেঞ্চে রয়েছেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি এস এ বোবদে, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি অশোক ভূষণ, বিচারপতি এস আব্দুল নাজির।

শুনানির সময়, হিন্দু পক্ষ যুক্তি দিয়েছিল যে ইসলামের তত্ত্ব অনুসারে কাঠামোটি মসজিদের নয়, এএসআই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, দেবনাগরী লিপিতে লেখা শিলালিপি মসজিদের স্তম্ভগুলিতে পাওয়া গেছে। অন্যদিকে, মুসলিম পক্ষ দাবি করেছে যে বিতর্কিত কাঠামোটি নির্মিত হওয়ার পর থেকেই এটি মসজিদ ছিল। তাঁদের যুক্তি ছিল যে ১৯৩৪ সালের দাঙ্গার পরেও এখানে নামাজ পড়া হয়েছিল এবং বাবরি মসজিদে একজন ইমাম এবং একজন মুয়াজ্জিমও থাকতেন, যাঁরা আজান পাঠ করেছিলেন।

ইতিমধ্যেই আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য অযোধ্যায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর মন্ত্রিপরিষদকে অযোধ্যা ইস্যুতে অপ্রয়োজনীয় মন্তব্য না করার বিষয়ে সতর্ক করেছেন।


সর্বশেষ সংবাদ