পরিকল্পনা ছাড়া সাফল্য অধরা : ইয়াং হুইয়ান

  © সংগৃহীত

বর্তমানে এশিয়ার সবচেয়ে ধনী নারী তিনি। চলতি বছরের শুরুতেই দ্রুততম সময়ে সম্পদ বাড়িয়ে বিশ্ব-বাণিজ্যের শীর্ষ আলোচনায় এসেছিলেন।হুইয়ান নামেই বিশ্বের বাণিজ্য দুনিয়ায় সাড়া জাগিয়েছেন। পুরো নাম ইয়াং হুইয়ান। জন্ম ২০ জুলাই, ১৯৮১।

গত ৫ জানুয়ারি হুইয়ানের মোট সম্পদ দাঁড়িয়েছিল ২ হাজার ৫৬০ কোটি ডলারে (২৫ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার)। আর তাতে কান্ট্রি গার্ডেনের ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকা হুইয়ান ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার সূচকে রাতারাতি চীনের পঞ্চম ধনী বনে যান।

ব্লুমবার্গ সূচক বলছে, হুইয়ান হচ্ছেন চীনের সবচেয়ে ধনী নারী এবং সবচেয়ে কম বয়সী বিলিওনিয়ার। ২০০৫ সালে বাবার প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির মালিকানা পান তিনি। ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত কান্ট্রি গার্ডেন হোল্ডিংসের সহপ্রতিষ্ঠাতা ছিলেন হুইয়ানের বাবা ইয়াং গিওকিয়াং। ২০০৫ সালে উত্তরসূরি হিসেবে মেয়েকে পারিবারিক এ ব্যবসার দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন গিওকিয়াং।

২০১৭ সালের হিসাব বলছে, কান্ট্রি গার্ডেন ৫৫ হাজার ৮০ কোটি (৮ হাজার ৫০০ কোটি ডলার) ইউয়ানের সম্পদ বিক্রি চূড়ান্ত করেছে। ফলে গত আগস্টে নেয়া ৫০ হাজার কোটি ইউয়ানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে প্রতিষ্ঠানটি। ব্যবসা বুঝে নেয়ার পর থেকেই নিত্যনতুন এবং সহজলভ্য আবাসন নিয়ে কাজ করেন হুইয়ান। সম্পত্তি বিক্রির ঊর্ধ্বগতি ও কোম্পানির স্বল্প ঋণ কৌশল নীতির কারণে কান্ট্রি গার্ডেন-এর শেয়ারের দাম উঠতে থাকে। ব্যবসায় আস্থা ও বিশ্বাস বড় পুঁজি বলে মনে করেন হুইয়ান।

চীনের শক্তিশালী আবাসন খাত এ বছর দেশটির প্রপার্টি ধনকুবদের খাতায় ৪ হাজার ৩৮০ কোটি ডলার যুক্ত করেছে। বছরের শুরু থেকেই কান্ট্রি গার্ডেন হোল্ডিংস কোম্পানির সহসভাপতি ও প্রধান অংশীদার ইয়াং হুইয়ান ৮২০ কোটি ডলার আয় করেছেন। অন্যদিকে সুনাক চায়না হোল্ডিংস লিমিটেডের সভাপতি সান হংবিন আয় করেন ৪২০ কোটি ডলার। ব্যবসায়িক আবহে বেড়ে ওঠায় বিচক্ষণ হুইয়ান বিশ্বের ব্যবসা প্রকৃতির সব বিষয়ে ধারণা রাখতেন।

বর্তমানে তার মোট সম্পদের পরিমাণ দুই হাজার ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। তিনি এখন চীনের সবচেয়ে ধনী নারী। আর বিশ্বের ধনীদের তালিকায় আছেন ৪২ নম্বরে। সবে বয়স ৩৭ বছর। চীনে আবাসন ব্যবসা করে এরকম একটি প্রতিষ্ঠান কান্ট্রি গার্ডেন হোল্ডিংসের বেশিরভাগ অংশেরই মালিক তিনি। চীনে প্রপার্টি নির্মাণে আজ যেমন হৈচৈ পড়েছে তার পেছনে বড় ধরনের ভূমিকা আছে কান্ট্রি গার্ডেনের। গবেষণা সূত্র বলছে, সারা বিশ্বে যতগুলো ডেভেলপার কোম্পানি আছে তার মধ্যে কান্ট্রি গার্ডেনের অবস্থান শীর্ষ পাঁচের মধ্যে।

সফল একটি ব্যবসাকে দীর্ঘমেয়াদে সফল রাখা কঠিন চ্যালেঞ্জ। সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যবসায় হয়তো পুঁজি নিয়ে ভাবতে হয় না। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে সে ব্যবসার অতীত সাফল্য ধরে রেখে ব্যবসার পরিসর বাড়ানো কঠিন বাস্তবতা।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের সচেতনতা বাড়ছে। সবাই এখন সেবামুখী। তাছাড়া বাজারে প্রতিযোগিতাও তুলনামূলক অনেক বেশি। নির্দিষ্ট সেবার ক্রেতা হাতছাড়া হয়ে যাওয়া মানে তাকে অন্য প্রতিষ্ঠানের জন্য ছেড়ে দেয়া। আজকের বাজারে তাই সন্তুষ্টি অর্জন করতে হয়। অর্থাৎ ব্যবসাকে হতে হবে জনকল্যাণমুখী এবং বিশ্বাসযোগ্য। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের সুবাদে ব্যবসার দ্রুত প্রসার হচ্ছে।

অন্যদিকে ব্যবসার সমালোচনাও রাতারাতি ছড়িয়ে পড়ে। তাই ব্যবসায় মান ধরে রাখতে আগের চেয়ে বেশি সচেতন হতে হয়। নিজের ব্যবসা উন্নতির পেছনের কারণ বলতে গিয়ে এসব কথাই বলেছেন ইয়াং হুইয়ান। মিডিয়াকে এড়িয়ে চলেন হুইয়ান। নিজের কাজের মধ্যেই বেশি সময় দেন। ব্যক্তি জীবনকে আলাদা করে ভাবেন তিনি। তরুণদের জন্য বিশেষ কিছু করার পরিকল্পনা আছে তার। পরিকল্পনা ছাড়া সাফল্য অধরা- এ কথা তিনি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন। তাই জীবনে সবাইকে পরিকল্পনা নিয়ে এগোনোর কথা বলেছেন।


সর্বশেষ সংবাদ