ভারতজুড়ে চিকিৎসকদের ধর্মঘট: বিপাকে বাংলাদেশীরা

  © সংগৃহীত

গোটা ভারতজুড়ে বিক্ষোভ ধর্মঘট শুরু করেছেন ডাক্তাররা। আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক ঘিরেও এখনও জটিলতা কাটেনি। সেখানে মিডিয়ার উপস্থিতি নিয়ে আন্দোলনকারীদের শর্ত না মানায় এখনও টানাপড়েন চলছে বৈঠকে আন্দোলনকারীদের উপস্থিতি নিয়ে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে বাংলাদেশীদেরও।

প্রথমে অবশ্য মিডিয়ার উপস্থিতির পাশাপাশি বৈঠকের আমন্ত্রণ পাওয়া নিয়েও তাঁদের মধ্যে বৈঠকে যোগদান ঘিরে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। সোমবার সকালেই আন্দোলনকারীরা জানান, মৌখিকভাবে বিভিন্ন সূত্র থেকে নবান্নে বৈঠকের কথা জানতে পারলেও সরকারিভাবে কোনও আমন্ত্রণপত্র তাঁরা হাতে পাননি। সরকারি আমন্ত্রণপত্র ছাড়া তাঁরা কোনও ভাবেই বৈঠকে যোগ দিকে পারবেন না।

সাংবাদিকদের এ কথা জানানোর কিছু পরই স্বাস্থ্য ভবন থেকে একটি আমন্ত্রণপত্র তাঁদের কাছে পৌঁছেছে। ওই আমন্ত্রণপত্রে অবশ্য মিডিয়ায় উপস্থিতি নিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের শর্তের উল্লেখ নেই। লেখা রয়েছে, প্রতিটা মেডিক্যাল কলেজ থেকে অন্তত দুজন প্রতিনিধি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এই বৈঠকে যোগ দিতে পারবেন। বেলা আড়াইটার মধ্যেই পরিচয়পত্র-সহ তাঁদের নবান্নে পৌঁছে যেতে হবে এবং পুরো বৈঠক রেকর্ড করা হবে।

রোববার রাত পর্যন্ত স্বাস্থ্য বিভাগের প্রস্তাব অনুয়ায়ী, নবান্ন সভাগৃহে আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের ২৮ জনের প্রতিনিধি দল মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে সম্মত হয়েছিল। রাতেই নবান্ন থেকে স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তার মাধ্যমে আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের জানানো হয়, মুখ্যমন্ত্রী সোমবার বেলা তিনটায় আন্দোলনকারীদের বৈঠকে ডেকেছেন।

কিন্তু সোমবার সকালে আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের একটি অংশ দাবি করেন, যতক্ষণ না সরকারিভাবে চিঠি দিয়ে তাঁদের বৈঠকের স্থান, কার সঙ্গে বৈঠক এবং কখন বৈঠক, এই তিনটি বিষয় স্পষ্ট করা হচ্ছে ততক্ষণ তাঁরা বৈঠকে অংশ নেবেন না। জটিলতা তৈরি হয় বৈঠকের সময় সংবাদমাধ্যমের উপস্থিতির প্রশ্ন নিয়েও।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের দাবি, রোববারই আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী এ ধরনের বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচারের জন্য কোনও সংবাদমাধ্যমকে উপস্থিত থাকার অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়। স্বাস্থ্য কর্তাদের দাবি, সেই শর্ত মেনেই বৈঠকে রাজি হয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা।

কিন্তু এ দিন সকালে আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের একটি অংশ ফের দাবি করেন, সংবাদমাধ্যমের উপস্থিতিতেই বৈঠক হতে হবে। তাঁরা বলেন, রোববারের জিবি বৈঠকের পর তাঁরা যে দাবিগুলো রেখেছিলেন, তার মধ্যে অন্যতম ছিল মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের সময় সংবাদমাধ্যমের উপস্থিতি।

সংবাদমাধ্যমের উপস্থিতি প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য দফতর যে সরকারি নিয়মকে তুলে ধরছেন, সেটা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের প্রশ্ন, মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠক যদি সরাসরি সম্প্রচারিত হতে পারে, তা হলে এই বৈঠকে সংবাদমাধ্যমের উপস্থিতি নিয়ে সরকারের আপত্তি কেন?

সূত্র জানিয়েছে, আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকরা ফের এই ইস্যুতে নিজেদের মধ্যে বৈঠক করতে পারেন আজ সোমবার। এই জটিলতা কাটাতে উদ্যোগী স্বাস্থ্য কর্তারা। তাঁরা যোগাযোগ করছেন আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে। স্বাস্থ্য কর্তাদের আশা, দ্রুত এই বিষয়টি নিষ্পত্তি হবে এবং আজই বৈঠক হবে। খবর: আনন্দবাজার।

এদিকে ভারতে চিকিৎসকদের আন্দোলনের কারণে বিপাকে পড়েছেন অনেক বাংলাদেশী। কারণ প্রতিদিনই ভারতে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশী চিকিৎসা নিতে যান। কিন্তু আন্দোলনের কারণে তাদেরকে তীব্র ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে বলে জানা গেছে।


সর্বশেষ সংবাদ