বইমেলায় পাওয়া যাচ্ছে চবি শিক্ষার্থী রাফির কাব্যগ্রন্থ ‘অরণ্যে অন্বেষণ’

  © টিডিসি ফটো

২০১৮ সালের ১৮ নভেম্বর ছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বি ইউনিটের ১৮-১৯ সেশনের ভর্তির শেষ তারিখ। আগের দিন (১৭ নভেম্বর) ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে আসার পথে ট্রেনে হারিয়ে যায় রহমতুল্লাহ রাফির ব্যাগ। যে ব্যাগে ছিলো ভর্তির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। ১৮ নভেম্বর সকালে চট্টগ্রামে পৌঁছে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন হাটহাজারী থানায়।

কাগজপত্রের মূল কপি হারিয়ে যাওয়ায় ফটোকপি নিয়ে হাজির হন ইসলামিক স্ট্যাডিস বিভাগে। নিয়মানুযায়ী কাগজপত্রের মূল কপি ছাড়া ভর্তি করাবে না বলে জানিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ।

উপায়ন্তর না দেখে সে বছর ২২ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে অনশনে বসেন রহমতুল্লাহ রাফি। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে দুই দিনের সময় দেওয়া হয় মূল কপি সংগ্রহের জন্য। শেষ পর্যন্ত ৩ ডিসেম্বর কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে ভর্তির সুযোগ পান তিনি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগেই পত্রপত্রিকায় উঠে আসে রাফির হার না মানা সে গল্প।

বছর পার হতেই রহমতুল্লাহ রাফি প্রকাশ করেন তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘অরণ্যে অন্বেষণ’। কাব্যগ্রন্থের পুরোটাই লিখেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর। এ বছর একুশে বই মেলায় দাঁড়িকমা প্রকাশনীর পরিবেশনায় বইটি ঢাকা চট্টগ্রাম উভয় জায়গায় পাওয়া যাবে।

ঢাকার মাদারিপুর জেলার শিবচর থানার অন্তর্গত শিরুয়াইল গ্রামের ছেলে রহমতুল্লাহ রাফি। ছোটবেলা থেকে বই পড়ার অভ্যাস। লেখকদের বর্ণনা ভঙ্গির গুণে মুগ্ধ হতে হতে কখন যে নিজেই লেখক হয়ে উঠেছেন সেটা নিজেরও অজানা। ২০১৯ সালে প্রথমবারের মত প্রকাশিত হয় রাফির গল্প 'অন্তিম পত্র'। এরপর লিখেছেন ‘অরণ্যে অন্বেষণ’ কাব্যগ্রন্থটি।

পাঠক এ কাব্যগ্রন্থের মাঝে খুঁজে পাবে প্রেম-দ্রোহ, প্রকৃতি, রীতি, রাজনীতি, মানবতা, স্যাটেয়ার, সাইকোলজি, ফিলসফিসহ বাস্তব জীবনের অনেক দৃশ্য। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ‘আওয়ার ক্যানভাস পাবলিকেশন’ বইটি প্রকাশ করে। একুশে বইমেলায় (ঢাকা) দাঁড়িকমা প্রকাশনীর ৬৯৮নং স্টল, (চট্টগ্রাম) ৩৬, ৯৮নং স্টলে পাওয়া যাবে।

রহমতুল্লাহ রাফি বলেন, লেখার মাধ্যমে মানুষের অনুভূতিতে পরিবর্তন করা যায়। সমাজের বাস্তবচিত্র তুলে ধরার জন্য লেখালেখির বিকল্প নেই। লেখার জন্য অনেক বেশি পড়তে হয় অনেককিছু জানতে হয়। আমি সেটাই করি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগেও আমি লেখালেখির চর্চা করতাম। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে চিন্তাচেতনার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। সহপাঠী, বড়, ছোট, শিক্ষক সবাই অনুপ্রাণিত করেছে। সবার কাছ থেকে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন অনেককিছু শিখছি।

‘সাহিত্য আমাদের মনের কথাগুলো ফুটিয়ে তোলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেশের কর্ণধার। এখানে শিক্ষার্থীরা অভিজ্ঞতা লাভের অনেক সুযোগ পান। সবার উচিৎ লেখালেখিতে ভূমিকা রাখা। সেটা গবেষণাধর্মী হোক কিংবা সাহিত্য’ রাফি যোগ করেন।


সর্বশেষ সংবাদ