এবার পেছাল অমর একুশে গ্রন্থমেলা

মেলার স্টল তৈরির প্রস্তুতি চলছে। রবিবার ছবিটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে তোলা।
মেলার স্টল তৈরির প্রস্তুতি চলছে। রবিবার ছবিটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে তোলা।  © সংগৃহীত

এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে। প্রতিবছর ১ ফেব্রুয়ারি গ্রন্থমেলা শুরু হয়। তবে এবছর ওইদিন ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন হওয়ার কারণে নির্দিষ্ট দিনে মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। রবিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

হাবীবুল্লাহ সিরাজী গণমাধ্যমকে বলেন, নির্বাচনের কারণে এক ফেব্রুয়ারির পরিবর্তে ২ তারিখে শুরু হবে। ওইদিন বেলা তিনটায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।

আসন্ন ৩০ জানুয়ারি ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটের দিনক্ষণ পেছানো হয়েছে। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি এ দিনক্ষণ নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পূজার জন্য ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটের দিন বদলের দাবিতে ব্যাপক সমর্থনের প্রেক্ষাপটে শনিবার বিকালে এক জরুরি বৈঠকে বসে ইসি। বৈঠক শেষে রাত আটটার পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা এ তথ্য জানান।

গ্রন্থমেলা শুধু বইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, এটি পরিণত হয়েছে বাঙালির প্রাণের মেলা, সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্যের মেলায়। প্রতি বছর ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গন ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জমে বইপ্রেমীদের এই মিলনমেলা। লাখ লাখ মানুষ সমাবেত হয় এখানে। জমে ওঠে লেখক, পাঠক ও প্রকাশকদের জমজমাট আড্ডা।

১৯৭২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমির বর্ধমান হাউসের সামনের বটতলায় চটের ওপর কলকাতা থেকে আনা ৩২টি বই সাজিয়ে বিক্রি শুরু করা সেই শ্রী চিত্তরঞ্জন সাহা আজ নেই। তিনিই আমাদের প্রাণের এই মেলার প্রারম্ভক। শুরুতে গ্রন্থমেলা মাসব্যাপী হত না। ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সীমাদ্ধ ছিল। ১৯৭৩ সালে বাংলা একাডেমি গ্রন্থমেলা উপলক্ষে ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশেষ হ্রাসকৃত মূল্যে বাংলা একাডেমি প্রকাশিত বই বিক্রির ব্যবস্থা করে। বাংলা একাডেমির পাশাপাশি মুক্তধারা প্রকাশনী, স্টান্ডার্ড পাবলিশার্স এবং আরও কয়েকজন বাংলা একাডেমির মাঠে নিজেদের প্রকাশিত বই বিক্রি শুরু করে।

১৯৭৮ সালে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্বে নেন ড. আশরাফ সিদ্দিকী। তিনি গ্রন্থমেলাকে বাংলা একাডেমির সঙ্গে সম্পৃক্ত করেন। তারপর ১৯৭৯ সালে মেলার সঙ্গে যুক্ত হয় চিত্তরঞ্জন সাহা প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ পুস্তক বিক্রেতা ও প্রকাশক সমিতি। ১৯৮৪ সালে পাঠক এবং প্রকাশকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে গ্রন্থমেলার সময়কাল বাড়িয়ে পুরো মাসব্যাপি করার সিদ্ধান্তও গ্রহণ করে বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ। ২০১৪ সাল থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে রুপানন্তরিত করে বিশাল আয়তনে গ্রন্থমেলার আয়োজন করে চলেছে।


সর্বশেষ সংবাদ