২০ কোটি টাকার বই জালিয়াতি, বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে ব্যারিস্টার সুমনের রিট

  © টিডিসি ফটো

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু কর্নারের জন্য বই কেনায় জালিয়াতি ও অনিয়মের ঘটনায় স্বাধীন কিংবা বিচারবিভাগীয় তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। দুটি প্রকাশনা সংস্থার নামেই ২০ কোটির বেশি টাকার বই সরবরাহ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন আজ সোমবার (৩১ আগস্ট) এই রিট করেন।

রিটে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, জার্নি মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড ও স্বাধীকা পাবলিশার্স এবং সাংবাদিক নাজমুল হোসেনের স্ত্রী শারমীন সুলতানাসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।

বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এই রিটের শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন রিটকারি আইনজীবী।

সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, ৬৫ হাজার ৭০০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু কর্নারের জন্য বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ৩৯টি বই কেনার অনুমতি দেওয়া হয়। এজন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ১৩০ কোটি টাকা। সেখান থেকে আপাতত ২৮ কোটি টাকায় আটটি বই কেনা হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, এই বই সরবরাহের নামে ১৭ কোটি ৫৭ লাখ ৫৬ হাজার ৫০০ টাকা বরাদ্দ পায় প্রকাশনা সংস্থা জার্নি মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড। আর স্বাধীকা পাবলিশার্স নামের প্রকাশনা সংস্থার নামে বরাদ্দ হয় ৩ কোটি ১৩ লাখ ৩৮ হাজার ৯০০ টাকা। এই দুটি প্রকাশনা সংস্থার সাথেই যুক্ত আছেন নাজমুল হোসেন নামের এক সাংবাদিক। যিনি যমুনা টেলিভিশনে সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত।

গণমাধ্যমের খবরে আরও বলা হয়েছে, বই কেনা প্রকল্পের মোট ২৮ কোটি ৭৮ লাখ ১২ হাজার ২০০ টাকার মধ্যে ২০ কোটি ৭০ লাখ ৮৬ হাজার ৪০০ টাকাই জার্নি মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড ও স্বাধীকা পাবলিশার্সের নামে বরাদ্দ হয়। যেখানে জার্নি মাল্টিমিডিয়ার নামে সরবরাহ করা হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’ এবং বঙ্গবন্ধুর সমগ্র কারাজীবন নিয়ে ৩০৫৩ দিন নামের বই দুটি। আর স্বাধীকা পাবলিশার্স থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে অমর শেখ রাসেল বইটি।

অন্যদিকে অভিযোগ উঠেছে যে, বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা বইটি প্রথম প্রকাশ করেছিল মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। আর ৩০৫৩ দিন প্রকাশ করেছিল কারা অধিদপ্তর। সেই বই জার্নি মাল্টিমিডিয়ার নামে প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা বইয়ের সম্পাদক অমিতাভ দেউড়ী তাকে না জানিয়ে বইয়ের দ্বিতীয় ও তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশ এবং বইয়ের ক্রেডিট লাইনে পরিবর্তন আনার অভিযোগ করেছেন। অন্যদিকে অমর শেখ রাসেল বইটি স্বাধীকা পাবলিশার্স প্রথম প্রকাশ করলেও এর সম্পাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য নাসরীন আহমেদকে না জানিয়েই তা প্রকাশ এবং বঙ্গবন্ধু কর্নারে সরবরাহ করার অভিযোগ করেছেন।


সর্বশেষ সংবাদ