বন্ধ হয়ে গেল দীপনপুর

মহামারি করোনা ভাইরাসের ধাক্কায় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে রাজধানীর কাঁটাবনে অবস্থিত বুকশপ ক্যাফে ‘দীপনপুর’। তিন বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে আর্থিক লোকসানের পর করোনার ধাক্কা সামলে উঠতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। শনিবার (১৩ জুন) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক আকিবুল ইসলাম আকিব। শুক্রবার থেকে দীপনপুরকে বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

২০১৭ সালে প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপনের ৪৫তম জন্মদিনে যাত্রা শুরু করেছিল দীপনপুর। উদ্বোধন করেন অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। ২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে জাগৃতি প্রকাশনীর কার্যালয়ে উগ্রবাদীদের হামলায় নিহত হন প্রকাশক দীপন। দীপনের মৃত্যুর পর তার সহধর্মিণী ডা. রাজিয়া রহমান জলি এগিয়ে আসেন স্বামীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে। জাগৃতির হাল ধরেন তিনি, পাশাপাশি দীপনের স্মৃতি ও চেতনাকে ধরে রাখতে প্রতিষ্ঠা করেন ভিন্নধর্মী বুকশপ ক্যাফে ‘দীপনপুর’।

দীপনপুরের ব্যবস্থাপক আকিব জানান, বইয়ের প্রতি মানুষের আগ্রহ খুবই কম। তিন বছর ধরেই লোকসানের মুখে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। করোনার তিন মাসে তো পুরোপুরিই লোকসান গুনতে হয়েছে। যার জন্য দীপনপুর চালু রাখা সম্ভব হয়নি।

এদিকে শ্রাবণ প্রকাশনীর কর্ণধার রবীন আহসান জানিয়েছেন, শুধু দীপনপুর নয়, দেশের অনেক সৃজনশীল প্রকাশকই অর্থ সংকটে পড়েছেন। ইতোমধ্যেই বনানীতে পেন্সিল নামের একটি বইয়ের দোকানও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

রবীন আহসান বলেন, ছোট পুঁজির ব্যবসা যাদের, তারা করোনার এই সময়টাতে ভীষণ সংকটে পরেছেন। প্রকাশনা শিল্পে তো সরকারের কোনো প্রণোদনা নাই। ফলে সৃজনশীল প্রকাশনা সংস্থাগুলো আর্থিক সংকটের ধাক্কা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন।

নাট্যশিল্পী হুমায়ূন আজম রেওয়াজ বলেন, সৃজনশীল প্রকাশনার ক্ষেত্রে সরকারি প্রণোদনা দেওয়া উচিত। দীপনপুরের মতো জায়গাগুলো বন্ধ হয়ে গেলে এই শহর আরও অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে। সরকারের উচিত, সৃজন ও মননশীল প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশে দাঁড়ানো। এভাবে দীপনপুর বন্ধ হয়ে যাওয়া আমাদের মননশীল চর্চাকে ক্ষতির মুখে ফেলবে।


সর্বশেষ সংবাদ