বই পড়ে পুরস্কার পেল দেড় হাজার শিক্ষার্থী

আমন্ত্রিত অতিথিরা এক ছাত্রীর হাতে তুলে দেন পুরস্কারের বই
আমন্ত্রিত অতিথিরা এক ছাত্রীর হাতে তুলে দেন পুরস্কারের বই  © সংগৃহীত

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বই পড়ে পুরস্কার পেল রাজশাহীর প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থী। বই পড়া শেষে পরীক্ষা দিয়ে ফলের ভিত্তিতে পুরস্কার হিসেবে বই-ই পেল তারা। শুক্রবার সকালে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয় বর্ণাঢ্য এ পুরস্কার বিতরণী উৎসব। আমন্ত্রিত অতিথিরা শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেন পুরস্কারের বই।

প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক বলেন, লাইব্রেরি হলো জ্ঞানের সমুদ্র। পৃথিবীর বিখ্যাত সব মনীষীর চিন্তারাশি সমুদ্রের সুবিশাল জলের মতো লাইব্রেরিতে আবদ্ধ থাকে। তাই লাইব্রেরিতে প্রবেশ করে এসব মহান মানুষের সঙ্গে পরিচিত হতে হবে। তাদের বই থেকে পাওয়া জ্ঞান আমাদের নিজেদের মধ্যে ধারণ করে আগামীতে দেশ ও সমাজের কাজে লাগাতে হবে। দেখবে, এক দিন সত্যি সত্যিই বাংলাদেশ আলোকিত হবে।

এভারেস্ট বিজয়ী এমএ মুহিত বলেন, প্রত্যেক মানুষের ভেতরেই একটা করে এভারেস্ট আছে। আর এই এভারেস্ট হলো তার স্বপ্ন। তাই চেষ্টা করলে প্রত্যেকেই স্বপ্নের এভারেস্ট জয় করতে পারেন। অনুষ্ঠানের অতিথি অভিনেতা খায়রুল আলম সবুজ পুরস্কারপ্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীদের বই পড়ে চিন্তার জায়গায় সৎ হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, আলোকিত মানুষ হতে হলে সৎ হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। টেলিভিশন-ব্যক্তিত্ব ডা. আবদুর নূর তুষার শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, তোমরা যাই হতে চাও না কেন, তার জন্য অবশ্যই চেষ্টা থাকতে হবে। তাহলেই সফল হওয়া সম্ভব।

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র জানায়, তাদের বই পড়া কর্মসূচিতে ২০১৮ সালের প্রথমেই রাজশাহী নগরীর ৩৫টি স্কুলের প্রায় ৪ হাজার শিক্ষার্থীকে সদস্য করা হয়েছিল। জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত তাদের মোট ১৬টি বই পড়তে দেওয়া হয়। পড়া শেষে নেওয়া হয় একটি পরীক্ষা। ওই পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে ১ হাজার ৪১৮ শিক্ষার্থীকে দেওয়া হলো পুরস্কার।

পরীক্ষায় ১৬টি বই থেকে দুটি করে প্রশ্ন থাকে। ফলেই বোঝা যায়, কে কয়টি বই পড়েছে। যারা সাতটি বই পড়েছে, তাদের স্বাগত পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। আর ১৬টি বই পড়লে পেয়েছে সেরা পাঠক পুরস্কার। এছাড়া ১০টি বই পড়ে শুভেচ্ছা এবং ১৩টি বই পড়ে অভিনন্দন পুরস্কার পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। স্বাগত পুরস্কারপ্রাপ্তদের দেওয়া হয়েছে একটি ছোট বই। শুভেচ্ছা পুরস্কারপ্রাপ্তদেরও দেওয়া হয়েছে একটি বই। তবে এটি একটি বড় বই। এছাড়া অভিনন্দন পুরস্কারপ্রাপ্তরা পেয়েছে দুটি এবং সেরা পাঠক পুরস্কারপ্রাপ্তরা পেয়েছে তিনটি করে বই।

স্বাগত পুরস্কার পেয়েছে ৫৩৬ জন। এছাড়া ৫৬৩ জন শুভেচ্ছা, ২৫৬ জন অভিনন্দন এবং ৬৩ জন সেরা পাঠক পুরস্কার পেয়েছে। সেরা পাঠক পুরস্কার বিজয়ী ৬৩ জনের মধ্য থেকে লটারির মাধ্যমে ছয়জনকে দেওয়া হয়েছে ২ হাজার টাকা সমমূল্যের বইয়ের একটি করে বিশেষ পুরস্কার। এছাড়া লটারির মাধ্যমে একজন অভিভাবককে দেওয়া হয় ২ হাজার টাকা সমমূল্যের বইয়ের একটি করে বিশেষ পুরস্কার। আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতা করেছে গ্রামীণফোন।

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের রাজশাহী অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক আবদুল মান্নান, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের নাটোর শাখার সংগঠক অধ্যাপক অলক মৈত্র, শিক্ষা বোর্ড স্কুলের অধ্যক্ষ তাইফুর রহমান, গ্রামীণফোনের রাজশাহী অঞ্চলের হেড অব ডিসট্রিবিউশন মোহাম্মদ তানভীর হোসাইন, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের রাজশাহী শাখার পূর্বতন সংগঠক ও নাগরিক অধিকার কর্মী আহমেদ সফিউদ্দিন প্রমুখ।


সর্বশেষ সংবাদ