মাসব্যাপী একুশে গ্রন্থমেলায় নতুন বই নেই ঢাবি প্রকাশনা সংস্থার!

অমর একুশে গ্রন্থমেলার ঢাবি প্রকাশনী সংস্থার স্টলে সাজিয়ে রাখা হয়েছে আগের প্রকাশিত বই। ফলে পাঠকের আনাগোনাও কম
অমর একুশে গ্রন্থমেলার ঢাবি প্রকাশনী সংস্থার স্টলে সাজিয়ে রাখা হয়েছে আগের প্রকাশিত বই। ফলে পাঠকের আনাগোনাও কম  © টিডিসি ফটো

মাসব্যাপী অমর একুশে গ্রন্থমেলা শেষ হচ্ছে আগামীকাল। মেলার আয়োজকরা সময় দুদিন বৃদ্ধি করায় ফেব্রুয়ারি পেরিয়ে মার্চ মাসে গড়িয়েছে এবারের গ্রন্থমেলা। এরপরও এবার নতুন কোনো বই প্রকাশ করেনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) প্রকাশনা সংস্থা। অথচ দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ হিসেবে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম রয়েছে দেশে-বিদেশে। বিষয়টি নিয়ে তীব্র হতাশা প্রকাশ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থী ও শিক্ষাবিদরা।

তারা বলছেন, একসময় এ বিশ্ববিদ্যালয় অনেক বিখ্যাত লেখকের জন্য দারুন খ্যাতি লাভ করেছিলো। নিয়মিত বই ও বিভিন্ন প্রকাশনা বের হতো। গবেষণাও হতো অনেক। কিন্তু এখন সে গৌরব হারাতে বসেছে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত এ বিশ্ববিদ্যালয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশনা সংস্থার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠার পর গত ৯৮ বছরে মাত্র ১৭৭টি বই প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। এরমধ্যে প্রথম প্রকাশিত বই ছিলো ১৯২৬ সালে মাইকেল ওয়েস্টের ‘The Construction of Reading Material for Teachers of Foreign Language’। এছাড়া সংস্থার সর্বশেষ প্রকাশিত বই হোসনে আরার লেখা ‘মহাশ্বেতা দেবীর কথাসাহিত্যে আদিবাসী জীবন’।

সংস্থার কাছে তাদের প্রকাশিত বইয়ের হালনাগাদ তালিকা চাওয়া হলে তাও দিতে ব্যর্থ হয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ২০১৬ সালে এ তালিকা সর্বশেষ হালনাগাদ করা হয় বলে জানিয়েছেন তারা। ওই বছরের পর সবমিলিয়ে পাঁচটির মতো বই প্রকাশিত হয়েছে। তবে চলতি বছর তিনটি নতুন বই আসতে পারে বলে দাবি তাদের। যদিও এখনো সেসব বই স্টলে এসে পৌছায়নি। আগামীকাল গ্রন্থমেলা শেষ হতে যাওয়ায় তা আর আসার সম্ভাবনা নেই বলেও স্টল সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশনা সংস্থার এ দুরবস্থার বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করে জাপানিজ ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগের ছাত্র মহিবুল্লাহ লিয়ন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। অথচ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশনা সংস্থা থেকে তেমন কোন বই বের হচ্ছে না, ফলে এখান থেকে নতুন বইও পাচ্ছি না। নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশনা সংস্থাই যদি বই প্রকাশ না করে তাহলে আমাদের জ্ঞানের বিকাশ কীভাবে হবে আমার জানা নেই।’

অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র মিনহাজ মুন্না বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টল থেকে পর্যাপ্ত বই পাওয়া যায়না। এছাড়া নতুন কোনো বইও সেখানে নেই। ঢাবির প্রকাশনী সংস্থা থেকে এটি আশা করা যায় না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এ বিষয়ে শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, এ খাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তেমন কোনো আগ্রহ নেই। সর্বশেষ বছরগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা প্রকাশনা সমৃদ্ধ করতে তেমন কোনো পদক্ষেপও গ্রহণ করেনি। তবে প্রকাশনা সংস্থার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হলে তা ভালো লেখকদের মনোযোগ আকর্ষণ করবে বলেও মনে করেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশনা সংস্থার উপ-পরিচালক ভবরঞ্জন চক্রবর্তী এ ব্যাপারে বলেন, সমস্যা সমাধানে কাজ করা হচ্ছে। এজন্য খুব শিগগিরই একটি গাইডলাইন তৈরি করা হবে বলেও জানান তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ