২৫ মার্চ ২০২০, ২০:৩৮

ইউজিসির আহবানে সাড়া, বাকৃবিতে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু

  © ফাইল ফটো

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আগামী ৯ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। তবে এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়কে অনলাইনে একাডেমিক কার্যক্রম চালানোর আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। গত সোমাবার দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দেওয়া কমিশনের এক চিঠিতে এ কথা জানানো হয়। চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ গবেষণা ও শিক্ষা নেটওয়ার্ক (বিডিরেন)-এর ডেটা সেন্টারের জুম অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে বিনা খরচে এই অনলাইন কার্যক্রম চালানো সম্ভব।

এরই ধারাবাহিকতায় জুম অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে অনলাইনে ক্লাস নিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) এক শিক্ষক। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পশু প্রজনন ও কৌলিতত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মুনির হোসাইন পশুপালন অনুষদের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়ার মাধ্যমে বাকৃবিতে অনলাইন ক্লাসের যাত্রা শুরু করেন। শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অনলাইন ক্লাসে অংশ নেন। প্রথম ক্লাসে ১২০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন।

এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. মুনির হোসাইন বলেন, পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের ক্লাসের চাপ কমাতে নিজে থেকেই অনলাইনে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। শিক্ষার্থীদের থেকে আমি তাদের ইমেইল সংগ্রহ করি এবং তাদেকে জুম অ্যাপস ডাউনলোড করতে বলি। এভাবে শিক্ষার্থীরা বাসায় থেকে ক্লাস করতে পারছে। অনলাইন ক্লাস পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা বেশ আগ্রহী। খুব সহজে এ পদ্ধতিতে যেকোনো শিক্ষকই ক্লাস নিতে পারবেন বলেও জানান তিনি।

অনলাইন ক্লাসে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান হাসিব বলেন, ঘরে বসে ক্লাস করতে পেরে ভালো লাগছে। এতে করে আমাদের পরবর্তীতে ক্লাসের চাপ কমে যাবে। অন্যদিকে সেমিস্টার লস কিছুটা হলেও কমবে। কিন্ত যাদের বাসা প্রত্যন্ত অঞ্চলে তাদের ক্লাস করতে সমস্যা হচ্ছে। কারণ তাদের এলাকায় ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবস্থা নেই।

গত সোমবার ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে। তা মোকাবিলার লক্ষ্যে শিক্ষকদের অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা উৎসাহিত করতে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিডিরেনের ডাটা সেন্টার ব্যবহার করে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী উভয়েরই শুধুমাত্র ডেক্সটপ কম্পিউটার/ল্যাপটপ অথবা স্মার্টফোন এ তিনটির যে কোনো একটি এবং স্থিতিশীল ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহারের মাধ্যমে স্বাভাবিক শ্রেণিকক্ষের মতো পাঠদান ও পাঠগ্রহণ কার্যক্রম চালাতে পারবেন।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে ই-মেইলের মাধ্যমে বিডিরেনের সাপোর্ট সেন্টারে যোগাযোগ করতে হবে। ই-মেইলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের মোবাইল নম্বরসহ বিস্তারিত পরিচয় দিতে হবে এবং ই-মেইলের কপিতে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে রাখতে হবে। বিডিরেন হতে ই-মেইলটির সত্যতা যাচাই করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ তৈরির বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে বিষয়টি অবহিত করা হবে। এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানার জন্যে বিডিরেনের সাপোর্ট সেন্টারে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনাভাইরাস মোকাবিলা করে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে এগিয়ে নেয়ার বিষয়ে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত হিসেবে প্রতিয়মান হচ্ছে। এছাড়া দেশের বেশ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও পরীক্ষামূলকভাবে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।